প্রযুক্তির বিকাশে অপরাধের সঙ্গে পুলিশের চ্যালেঞ্জও বেড়েছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বর্তমানে যোগাযোগ ও প্রযুক্তির বিকাশে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি তা মোকাবিলা করা পুলিশের জন্যও ‘চ্যালেঞ্জিং’ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিশ্বায়নের এ যুগে সহিংস চরমপন্থা ও আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত অপরাধগুলো জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য একটি ‘বিশাল হুমকি’। গতকাল সোমবার ‘একাদশ বার্ষিক আন্তর্জাতিক পুলিশ অ্যাকাডেমি অ্যাসোসিয়েশন সম্মেলন (ইন্টারপা)’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। খবর: বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উন্নত প্রযুক্তি ও নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা এ ধরনের অপরাধী নেটওয়ার্কগুলোকে শক্তিশালী করেছে। সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মুদ্রা জালিয়াতি ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের মতো নতুন চ্যালেঞ্জের উদ্ভব হচ্ছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ গোটা বিশ্বে সুদূরপ্রসারী অস্থিতিশীল প্রভাব ফেলে। এ প্রেক্ষাপটে পুলিশিং কার্যক্রম চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে।’

প্রযুক্তির বিকাশে যে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তা এককভাবে কোনো জাতি ‘সমাধান করতে পারে না’ বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এসব বিপদ মোকাবিলায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সুসংহত করার বিকল্প নেই।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মহাদেশজুড়ে পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পেশাদারদের সমন্বয়ে ইন্টারপা’র এ অনন্য সম্মেলন অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সর্বোত্তম চর্চাগুলো পরস্পরের শেয়ার করার ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন পথ উšে§াচন করবে। পুলিশিংয়ের ডিজিটালাইজেশন সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা এবং অন্যান্য প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে আমি গর্বের সাথে বলতে চাই, বাংলাদেশ পুলিশ সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থাকে সফলভাবে মোকাবিলায় তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। আমাদের সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য পুলিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুণগত পরিবর্তন এসেছে। আগামী দিনে এই গতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।’

পুলিশ অ্যাকাডেমি অ্যাসোসিয়েশন সম্মেলনটি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতার একটি কার্যকর ক্ষেত্র তৈরি করে সাধারণ ঐকমত্যে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেবে বলে আশা শেখ হাসিনার।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সদস্য দেশগুলোর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে উন্নত প্রযুক্তি, দক্ষতা, গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার ও সমন্বয় বিশ্বজুড়ে চরমপন্থা ও আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিনর্ভর অপরাধ দমনে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা বাড়াতে আমাদের অবশ্যই একটি সমন্বয় তৈরি করতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক নিরাপত্তাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি সাধন হয়েছে। আমরা এসডিজির সফল বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। সীমান্তবর্তী এবং প্রান্তিক এলাকার মানুষও ক্রমবর্ধমান তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা পাচ্ছে। দক্ষ, সেবামুখী ও আইসিটিবান্ধব সেবার মাধ্যমে প্রান্তিক জনগণসহ সবার কাছে তথ্যপ্রযুক্তি সহজলভ্য করে দেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তরের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’

বাংলাদেশ যে এরই মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে, সে কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা গর্ব করে বলতে চাই, বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে নিজেকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে তুলে ধরেছে। বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হয়েছি। এই উল্লেখযোগ্য অর্জন প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের ক্রমাগত সাফল্যের সাক্ষ্য দেয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০