শেয়ার বিজ ডেস্ক : মার্কিন ১২৮টি পণ্য আমদানিতে চীনের শুল্কারোপে বাণিজ্যযুদ্ধের উদ্বেগ এবং প্রধান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ধসে বিশ্ব পুঁজিবাজারে প্রভাব পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার প্রধান সূচকগুলো নি¤œমুখী ধারায় ছিল। খবর রয়টার্স।
গত সোমবার ওয়ালস্ট্রিটের পুঁজিবাজারের সূচক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে চলে আসে। ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন ও চিপ নির্মাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান ইনটেলের শেয়ার পতনÑবাজার নি¤œমুখী করতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাজনের বিরুদ্ধে যথাযথ কর না দেওয়ার এবং ডাকবিভাগের অন্যায্য সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে একাধিক টুইট করেন এবং অভিযোগের সত্যতা বিচারে তদন্তের কথা বলেন। এর পরই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর পড়তে থাকে। সোমবার আমাজনের শেয়ারদর পড়েছে পাঁচ শতাংশের বেশি।
এদিকে আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল ইনটেলের চিপ ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিপরীতে তারা নিজেদের তৈরি চিপ ব্যবহার করবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। ইনটেলের শেয়ারদর ছয় শতাংশের বেশি পড়ে যায়।
অন্যদিকে সম্প্রতি মার্কিন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলার মডেল এক্সের একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। প্রতিষ্ঠানটির গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর পাঁচ শতাংশের বেশি পড়ে যায়।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন পতনের সঙ্গে যোগ হয়েছে বাণিজ্যযুদ্ধের উদ্বেগ। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপ ও চীনা পণ্যের ওপর ছয় হাজার কোটি ডলারের শুল্কারোপের ঘোষণার জবাবে গতকাল সোমবার মার্কিন ১২৮টি পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করে। হোয়াইট হাউজের সামালোচনা করেছে। তারা এ সপ্তাহের মধ্যেই চীনের পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করবে বলে জানিয়েছে। আগে করা পণ্যের তালিকা আরও বড় করতে পারে হোয়াইট হাউজ। দীর্ঘদিনের হুমকি-পাল্টা হুমকির পর বাণিজ্যযুদ্ধ দৃশ্যমান হলো। এসব কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার মার্কিন পুঁজিাবাজারের অন্যতম প্রধান সূচক ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজের শেয়ারদর কমেছে এক দশমিক ৯০ শতাংশ। নাসডাকের শেয়াদর পড়েছে দুই দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমেছে দুই দশমিক ২৩ শতাংশ।
এদিকে সোমবার মার্কিন শেয়ারের দরপতনের পর এশিয়ার প্রধান শেয়ারবাজারের সূচকগুলোও নি¤œমুখী প্রবণতায় ছিল। জাপানের নিক্কেই সূচক গতকাল মঙ্গলবার পড়েছে দশমিক ৪৫ শতাংশ। চীনের সাংহাই সূচক কমেছে দশমিক ৮৪ শতাংশ। ভারতের সেনসেক্স সূচক পড়েছে দশমিক ১০ শতাংশের বেশি।
এছাড়া ইউরোপের বাজারেও দেখা গেছে নেতিবাচক প্রভাব। জার্মানির প্রধান সূচক ডিএএক্সের সূচক কমেছে এক দশমিক ৩৭ শতাংশ। লন্ডানের এফটিএসই সূচক কমেছে দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক কমেছে দশমিক ৮০ শতাংশ।