প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। এর পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে সৌন্দর্য। সংগত কারণে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প দিন দিন এগিয়ে চলছে।
দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে এ দেশের রূপবৈচিত্র্য উপভোগ করতে। এমনই একটি দর্শনীয় স্থান মহামায়া লেক।
বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন স্থান এ মহামায়া লেক। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ এটি। ১১ বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট লেকটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে মিরসরাই উপজেলার ৮নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘি বাজার থেকে দেড় থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত।

পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা লেকটি যেন সৃষ্টিকর্তার অপার সৃষ্টি। ছোট-বড় কয়েকটি পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত এ মহামায়া লেকের অন্যতম আকর্ষণ পাহাড়ি ঝরনা। স্বচ্ছ পানির জলাধারের চারপাশ সবুজ চাদরে মোড়া। মনে হয় কোনো সুনিপুণ শিল্পীর সুনিপুণ কারুকাজ।
নীলাভ জলরাশিতে ডিঙি নৌকা কিংবা ইঞ্জিনচালিত বোট নিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে। এসব নৌকার প্রতিটির ভাড়া ওঠানামা করে ৬০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। বন্ধুবান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে পানির কলকল ধ্বনিতে মুখর লেকে নৌভ্রমণ ভীষণ আনন্দদায়ক। লেকের চারপাশে পাহাড়ের বুক চিরে ছুটে চলা যে কোনো পর্যটককে এটি মুগ্ধ করতে বাধ্য। গোধূলিলগ্নে সূর্য যখন অন্তিম নীলিমায় ডুবে যায়, তখন লেকের পরিবেশ মোহনীয় হয়ে ওঠে।
পিকনিকের জন্য মহামায়া লেক দারুণ একটা জায়গা। এখানে এসে আপনি রান্না করেও খেতে পারেন। অনেকে লেকের কোলে অবস্থিত বিস্তীর্ণ ভূমিতে ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলায় মেতে ওঠে।
যেভাবে যাবেন
রাজধানীর কমলাপুর থেকে বিআরটিসির বাসযোগে যেতে পারেন। সায়েদাবাদ থেকে এস আলম, সৌদিয়া, গ্রিন লাইন, সোহাগ, ইউনিক প্রভৃতি এসি ও নন-এসি পরিবহনের বাসে চড়ে সরাসরি মিরসরাই যেতে পারেন। এখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে মহামায়া লেকে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
যেখানে থাকবেন
মহামায়া লেকের আশেপাশে থাকার তেমন কোনো সুব্যবস্থা নেই। আপনি চাইলে চট্টগ্রামের স্টেশন রোডে অবস্থিত হোটেল প্যারামাউন্ট কিংবা হোটেল এশিয়ান এসআরএতে থাকতে পারেন। আগ্রাবাদে হোটেল ল্যান্ডমার্ক ও নিজাম রোডে অবস্থিত হোটেল সাকিনাও উন্নতমানের।
সতর্কতা
সাঁতার না জানলে পানিতে না নামাই উত্তম। লেকের পানিতে বোতল কিংবা অপচনশীল দ্রব্য ফেলবেন না।
তারেকুর রহমান