প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সবাই যেন আইনের আওতায় আসে

বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রথম এমন উঠে আসে। পরবর্তী সময় অন্য গণমাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য এসেছে। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (বিপিএসসি) সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীর সম্পদের অনেক তথ্য জানা গেছে।

পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেছেন, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী পিএসসিতে অনেক প্রভাবশালী ছিলেন। তার প্রভাব এতই ছিল তাকে বরখাস্ত করার পর চাকরিচ্যুত করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে পিএসসির তৎকালীন দায়িত্বশীলদের। তিনি আরও বলেছেন, পিএসসির অনেক কর্মকর্তাও আবেদ আলীকে সমীহ করতেন।

এদিকে বিপিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সংস্থাটির সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আবেদ আলীর পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার জমি। বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসসহ বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি পাইয়ে দেয়ার মাধ্যমে তারা বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন তথ্য দেশের মেধাবী চাকরিপ্রার্থীদের হতাশ করবে বলেই ধারণা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় মেধা ও যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য কোনো অবলম্বন বুঝি আর রইল না!

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা এই প্রথম নয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা মেধাবীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সরকারের উচিত জালিয়াত চক্রকে ঠেকাতে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা প্রমাণ করে, দেশের কর্মসংস্থান সমস্যা কতটা প্রকট। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীরা ছিটকে পড়বে।

বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস বরাবরই এড়িয়ে গেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করলেও তা যে অসত্য নয়, এটি আর লুকোছাপা রইল না। কোনো প্রতিষ্ঠান একা সব দুর্নীতি, অনিয়ম, প্রশ্নপত্র ফাঁস দমন করতে পারবে না। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ অনিয়ম দূর করা সম্ভব। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে। প্রশ্ন ফাঁস চক্রের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে নমনীয় হলে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা যাবে না।

প্রায় সব পরীক্ষার প্রশ্নপত্রই বলা যায় কমবেশি ফাঁস হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত হাতেগোনা কয়েকজন, কিন্তু ভুক্তভোগী অনেক। সব পরীক্ষা বাতিল করাও সম্ভব হয় না। নতুন করে পরীক্ষা গ্রহণ কঠিনও বটে। ফলে যেকোনো মূল্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে হবে। এ-জাতীয় অপরাধীদের কঠোর শাস্তির বিধান করা হলে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করাটা অসম্ভব নয়। যে পদ্ধতিতেই পরীক্ষা নেয়া হোক না কেন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। ভর্তি, পাবলিক কিংবা নিয়োগÑকোনো পরীক্ষায়ই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া কাম্য নয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০