পাঠকের চিঠি

প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হবে কবে

কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষাগুলোয় প্রশ্নপত্র ফাঁস অতিসাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর গণমাধ্যমের শিরোনামে স্থান দখল করে নিচ্ছে। আগে একাডেমিক পরীক্ষাগুলোয় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেলেও এখন সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলোয় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

সম্প্রতি প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ে অডিটর নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, একজন সাবেক সেনাসদস্য ও আরেকজন রেলওয়ে কর্মকর্তা। একজন জনপ্রতিনিধি এমন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার খবর প্রচারিত হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

পাঁচটি সরকারি ব্যাংকের ‘অফিসার ক্যাশ’ পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আহ্?ছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটির একাধিক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদে বুয়েটের একজন অধ্যাপকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। গত ৬ বছরে বুয়েটের এই অধ্যাপকের ব্যাংক হিসাবে ১০ কোটি টাকার লেনদেন পেয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপরাধবিজ্ঞানীরা বলছেন, একজন অপরাধী তার অপরাধের পূর্বপরিকল্পনায় অপরাধের ফলে প্রাপ্ত শাস্তির মাত্রা এবং লাভের পরিমাণের মধ্যে তুলনা করেন। অপরাধীর কাছে অপরাধের শাস্তির চেয়ে লাভের পরিমাণ বেশি মনে হলে তিনি অপরাধ করতে অত্যধিক আগ্রহী হন এবং একসময় অপরাধ করেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের সদস্যদের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটিই যেন ঘটছে। কেউ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, কেউবা আইনি জটিলতাকে কাজে লাগিয়ে অপরাধ করা সত্ত্বেও প্রাপ্ত শাস্তির হাত থেকে যেকোনোভাবে রেহাই পাচ্ছেন এবং একই ধরনের অপরাধের পুনারাবৃত্তি ঘটাচ্ছেন। ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে কোনোভাবেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করার বিষয়টি ঠেকানো যাচ্ছে না।

অনেকে অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে অর্থের কাছে নিজের আত্মসম্মান আর বিবেকবোধকে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। অন্যদিকে ফাঁসকারী চক্রের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরাও লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে সরকারি চাকরি নিচ্ছেন এবং পরে তারাই ঘুষগ্রহণসহ বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছেন। এতে স্বপ্নভঙ্গ হচ্ছে লাখো শিক্ষিত বেকারের। উপযুক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অর্থাভাবে সরকারি চাকরি জোটাতে পারছেন না। স্নাতক পাস করা চাকরি প্রত্যাশী মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রতিটি যুবকের একটিই প্রশ্নÑসরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলোয় প্রশ্নপত্র ফাঁস আদৌ কি বন্ধ হবে?

ইমরান হোসাইন ইমন

শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০