নিজস্ব প্রতিবেদক: কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন, কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধি, আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্ব, পরিচালকদের নির্দিষ্ট পরিমাণের কম শেয়ার ধারণ ও বিভিন্ন ইস্যুতে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করায় পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানিকে তলব করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ বেলা ১১টায় কোম্পানিগুলোর সব পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিবদের বিএসইসিতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
সূত্রমতে, তলব পাওয়া কোম্পানিগুলো হলো এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি লিমিটেড, খান ব্রাদার্র্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেড (প্রাণ), সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড, ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেড ও ইনটেক লিমিটেড।
সূত্র জানিয়েছে, কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন, কারসাজি করে কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা ও কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্ব করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি কোম্পানিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের সামষ্টিকভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ নেই। সাম্প্রতিক সময়ে এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে কয়েকটির শেয়ারদর কোনো কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিরও শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় অস্বাভাবিক হারে।
এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে কয়েকটি কোম্পানির কাছে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে কি না তা জানতে চেয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সব কোম্পানি উত্তরে ডিএসইকে জানিয়েছে, তাদের কাছে শেয়ারদর বৃদ্ধিসংক্রান্ত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। শেয়ারদর বৃদ্ধির কারণ তারা জানে না। এসব বিষয়ে জানতে কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় থাকা সংশ্লিষ্টদের তলব করেছে বিএসইসি।
সূত্রমতে, কোম্পানিভেদে বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে কমিশন। এজন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে। এসইসির কর্মকর্তারা মনে করছেন, কোম্পানির কাছে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য থাকার পরেও তা হয়তো গোপন করা হচ্ছে। এছাড়া বিএসইসির কিছু নির্দেশনা পরিপালন করেনি কোম্পানিগুলো। কেন পালন করেনি কোম্পানিগুলো তারও ব্যাখ্যা চাইবে কমিশন।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন ও বিভিন্ন ইস্যুতে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। সে কারণ দর্শানোর নোটিসের উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পারলে কোম্পানির প্রতিনিধিদের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ডাকা হয়।
কোম্পানিগুলোর দেওয়া ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হলে তাদের বিপরীতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। লঘু অন্যায় হলে সতর্ক করেই ছেড়ে দেয় কমিশন। আর ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে না পারলে আইন লঙ্ঘনের ধরন অনুযায়ী আর্থিক দণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দেয় বিএসইসি।
প্রাণসহ ১০ কোম্পানিকে তলব করেছে বিএসইসি
