প্রাথমিকে এবার সমাপনী পরীক্ষা হচ্ছে না বৃত্তিও নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ মহামারির মধ্যে এবার কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) নেবে না সরকার। তার বদলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানিয়েছেন। আর পিইসি পরীক্ষা না থাকায় এ বছর বৃত্তিও দেওয়া হবে না।

গতকাল সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ না করার বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। অতএব আমরা পিইসি পরীক্ষাটা নিচ্ছি না। এ বছর স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষাগুলো নেব।’

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা না নিয়ে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা নিতে গত ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরুর পর থেকে খুদে শিক্ষার্থীদের এই পরীক্ষায় বসতে হতো অন্য বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে এই পরীক্ষার আয়োজন করে আসছিল। আর এই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই প্রাথমিক স্তর শেষ করা শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হচ্ছিল। কভিড মহামারির কারণে এবার কেন্দ্রীয় এ পরীক্ষা না হওয়ায় প্রাথমিকে বৃত্তিও দেওয়া হবে না বলে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন। 

গত বছরের প্রাথমিক সমাপনীর ফলাফলের ভিত্তিতে এবারও ৮২ হাজার ৫০০ জনকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় এবার মোট ২৯ লাখ শিক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হলে তাতে এমসিকিউ প্রশ্ন থাকবে কি নাÑজানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘এটা স্কুল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে, আমরা তাদের দায়িত্ব দেব। শিক্ষকরা যেভাবে প্রশ্ন করবেন সেভাবেই হবে। নিজ নিজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এই সিদ্ধান্ত দেবেন।’

সচিব বলেন, ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিকে (নেপ) তিনটি বিকল্প পাঠ পরিকল্পনা করতে বলেছিলাম। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের জন্য তিনটি পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছিল। যেহেতু সেপ্টেম্বরে এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি, তাই সেপ্টেম্বরকে বিকল্প হিসেবে ধরছি না। অক্টোবর ও নভেম্বরকে সামনে রেখে যে পাঠ পরিকল্পনা করেছি, সেটাকে সামনে রেখে, সেটার ভিত্তিতে প্রত্যেকটা স্কুল ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র করে পরীক্ষা নেবে।

কভিড মহামারির কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা আছে।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কীভাবে স্কুল খোলা যায়, সেই নীতিমালা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়ে আকরাম বলেন, ‘গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে আমরা এটা জারি করব। স্কুল রি-ওপেনিং হলে কী কী করতে হবে, সেটা ওই নীতিমালার মধ্যে বলা আছে। প্রত্যেকটা স্কুলকে বলেছি, নিজেদের মতো করে রি-ওপেনিং প্ল্যান করতে। কারণ একেক স্কুলের ছাত্রসংখ্যা একেক রকম। এসব বিবেচনায় নিয়ে তারা পরিকল্পনা করবেন।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খোলা হবে, সেই সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একসঙ্গে বসে নেবে বলে জানিয়ে গণশিক্ষা সচিব বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেব, কবে স্কুল খুলতে পারব।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ারও চিন্তা করা হচ্ছে। তবে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০