নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাদ দিয়ে পরিমার্জিত প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিন্যাস চূড়ান্ত করেছে সরকার। গত ১০ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক জাতীয় কর্মশালায় পরিমার্জিত এই প্রশ্নপত্রের কাঠামো চূড়ান্ত করা হয় বলে গত বৃহস্পতিবার এক আদেশে জানিয়েছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি।
আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন বাদ দিয়ে সেখানে নতুন ধারার প্রশ্ন যুক্ত করে এবার থেকে পিইসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে। এমসিকিউ প্রশ্ন বাদ দেওয়া হলেও পরীক্ষার সময় আগের মতো আড়াই্র ঘণ্টা থাকবে।
উল্লেখ্য, গত বছর প্রাথমিক সমাপনী পারীক্ষার প্রায় সব বিষয়ের প্রশ্ন পরীক্ষার আগের রাতে বা পরীক্ষার দিন সকালে ফাঁস হয়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। পরে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জেএসসি-জেডিসি এবং এবারের এসএসসি পারীক্ষাতেও প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটে। প্রশ্ন ফাঁস মহামারির আকার ধারণ করায় প্রশ্ন পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।
পরীক্ষার ঘণ্টাখানেক আগে প্রশ্ন ফাঁস হলে সেখান থেকে সহজেই বহু নির্বাচনি অংশের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও প্রাথমিক স্তরের পরীক্ষায় বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এসএসসিতে এমসিকিউ প্রশ্ন প্রবর্তন করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। তখন মোট ৫০টি বহু নির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো; প্রতিটির জন্য বরাদ্দ ছিল এক নম্বর করে। দীর্ঘদিন ওই ব্যবস্থা চলার পর প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এখন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশ কমিয়ে আনছে সরকার। আর এবার থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হবে শতভাগ সৃজনশীল প্রশ্নে। ২০১৬ সালে প্রতি বিষয়ে ৬৫ শতাংশ এবং ২০১৭ সালে ৮০ শতাংশ প্রশ্ন ছিল যোগ্যতাভিত্তিক, বাকি প্রশ্ন ছিল সনাতন ধরনের। ২০০৯ সালে সারা দেশে একসঙ্গে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরুর পর ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্ন সংযোজন করা হয়।
এরপর ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ২০১৩ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৩৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৫০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্নে খুদে শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা হয়। যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের উত্তর লিখতে হয় চিন্তা করে। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থীই দুই ঘণ্টায় পরীক্ষা শেষ করতে না পারায় ২০১৩ সালে এই পরীক্ষার সময় ৩০ মিনিট বাড়িয়ে আড়াই ঘণ্টা করা হয়।
