Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:06 am

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি কমল

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ১৯ থেকে ২৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে এ ছুটি ২৪ থেকে ২৯ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণ করে গতকাল আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটির তালিকাসহ বর্ষপঞ্জি ২০২১ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে মুদ্রণ ও মাঠপর্যায়ে বিতরণ করা হয়। বর্ষপঞ্জিতে যিশুখ্রিষ্টের জš§দিন (বড়দিন) ও শীতকালীন অবকাশ ১৯ থেকে ২৯ ডিসেম্বর উল্লেখ রয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘দেশে কভিডের প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুনরায় শ্রেণি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি দূরীকরণের জন্য এনসিটিবি, নেপ ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে পুনর্বিন্যস্ত এআরএলপি ও ব্লেন্ডেড রুটিন (অনলাইন, সরাসরি রেডিও এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে) প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে এ পুনর্বিন্যস্ত এআরএলপি ও ব্লেন্ডেড রুটিন অনুসরণে সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয়সমূহে শিখন শেখানো কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পুনর্বিন্যস্ত এআরএলপি ও ব্লেন্ডেড রুটিন অনুসারে আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম চালমান থাকবে।’

নির্দেশনায় বলা হয়, এমতাবস্থায় যিশুখ্রিষ্টের জš§দিন (বড়দিন) ও শীতকালীন ছুটি পালনের জন্য ২৪ থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শীতকালীন বন্ধ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের বাৎসরিক ছুটির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১৯ থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সে অনুযায়ী দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মৌখিক বা লিখিত মূল্যায়ন শেষ করা হয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বা দূর-দূরান্তে বেড়াতে গেছে।

ঢাকা ও এর আশেপাশের বেশিরভাগ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মন্ত্রণালয়ের পূর্ব নির্ধারিত ছুটি অনুযায়ী নতুন কোনো নির্দেশনা না আসায় শিক্ষকরা মূল্যায়ন সম্পন্ন করে ফেলেছেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললে চলে। তাছাড়া মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদরাসাসহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ১০ দিন আগে বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছে না। শিক্ষকদের প্রশ্ন, এই অবস্থায় তারা কাকে পাঠ দান করাবেন? শিক্ষক সংগঠনগুলো সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৯ ডিসেম্বর থেকে ছুটি কার্যকর করার দাবি জানান। এ বিষয়ে তারা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একই পরিবারের প্রাথমিকের শিশুরাও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছে। ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি একেবারে কম। এ অবস্থায় আমরা ১৯ ডিসেম্বর থেকে শীতকালীন ছুটি মঞ্জুরের দাবি জানাচ্ছি। আশাকরি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুবিবেচনায় রাখবেন।