নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তা থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। পরীক্ষাকেন্দ্রের শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সভা শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও প্রশ্নফাঁস রোধে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবে। এর সঙ্গে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। কোনো ধরনের অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সচিব বলেন, প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষা ঘিরে প্রতিটি কেন্দ্রের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। তারা নানা বিষয়ে আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সুষ্ঠুভাবে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনে দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার হলে কোনো ধরনের ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। পুরোনো প্রার্থী পেলে তাকে তখনই ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেয়া হবে। কেউ কোনো ধরনের অনিয়ম করলে বা করার চেষ্টা করলে আইনের আওতায় আনা হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
এদিকে পর্যাপ্ত পরীক্ষাকেন্দ্র প্রস্তুত করা সম্ভব না হওয়ায় সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা তিন ধাপে আয়োজন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে ২২ এপ্রিল, দ্বিতীয় ধাপে ২০ মে ও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা নেয়া হবে আগামী ৩ জুন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ২২টি জেলার মধ্যে ১৪টির সব উপজেলা ও ৮টি জেলার কয়েকটি উপজেলা মিলে মোট ৫০৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তিন ধাপে দেশের ৬১ জেলায় প্রাথমিকের এ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা আগামী ২০ মে আয়োজন করা হবে। এ ধাপে কতটি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ২৭ মে নির্ধারণ করা হলেও সেদিন বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা থাকায় তা পরিবর্তন করে ৩ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ধাপের লিখিত পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে সাত দিন আগে প্রার্থীদের অনলাইনে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে সংগ্রহ করতে মোবাইল ফোনে এসএমএস দেয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রার্থীর নিজ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে।
ডিপিই থেকে জানা গেছে, প্রথম ধাপে আগামী ২২ এপ্রিল চাঁপাইনবাগঞ্জ, মাগুরা, শেরপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, লালমনিরহাটের সব উপজেলার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
একই দিন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, কাজীপুর; যশোরের ঝিকরগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা; ময়মনসিংহের ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ; নেত্রকোনার আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া; কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, ভৈরব, হোসেনপুর, ইটনা, করিমগঞ্জ, কটিয়াদি; টাঙ্গাইলের সদর, ভূয়াপুর, দেলদুয়ার, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর; কুমিল্লার বরুয়া, ব্রাক্ষণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, সদর, মেঘনা, দাউদকান্দি ও নোয়াখালীর কবিরহাট, সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ি, সুবর্ণচর উপজেলার প্রার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।