নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি সাত দশমিক ৬৫ শতাংশ হবে বলে আশা করছে সরকার। একই সঙ্গে মাথাপিছু আয় বেড়ে এক হাজার ৭৫২ ডলার হবে। অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের (জুলাই-মার্চ) তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ের প্রাথমিক (প্রভিশনাল) এ হিসাব করেছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাক্কলন অনুযায়ী চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের জিডিপির আকার দাঁড়াবে প্রায় ২৭৫ বিলিয়ন ডলারে। টাকার অঙ্কে যা ২২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে। গত অর্থবছরে জিডিপির আকার ছিল ২৪৮ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। টাকার অঙ্কে যা ১৯ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকার মতো।
জিডিপি প্রবৃদ্ধির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মূলত রফতানি বাণিজ্য, রেমিট্যান্স আর রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতি বাড়িয়েছে। সহায়ক সব খাতের অবস্থা ভালো হওয়ায় প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছে। ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন খাতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনীতির অবস্থা দিন দিন ভালো হচ্ছে।’
পরিসংখ্যান ব্যুরো যে হিসাব দিয়েছে, তাতে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে। গত অর্থবছরের এ খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১১ শতাংশ। শিল্প খাতে ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা গত অর্থবছরে ১০ দশমিক ২২ শতাংশ ছিল। আর কৃষিতে তিন দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ, মৎস্য খাতে ছয় দশমিক ৩০ শতাংশ, নির্মাণ খাতে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, হোটেল রেস্তোরাঁ খাতে সাত দশমিক ২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক হিসাব করা হয়েছে।
তবে সেবা খাতসহ বেশ কয়েকটি খাতের প্রবৃদ্ধি এবার কমবে বলে মনে করছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। সেবা খাতে গত অর্থবছরের ছয় দশমিক ৬৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে এবার প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ছয় দশমিক ৩৩ শতাংশ।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ খাতে গত অর্থবছরের আট দশমিক ৪৬ শতাংশের জায়গায় এবার আট দশমিক ৩৬ শতাংশ; শিক্ষা খাতে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশের জায়গায় সাত দশমিক ৯৩ শতাংশ; স্বাস্থ্য ও সামাজিক কার্যক্রম খাতে সাত দশমিক ৬৩ শতাংশের জায়গায় সাত দশমিক শূন্য দুই শতাংশ; আর্থিক খাতে ৯ দশমিক ১২ শতাংশের জায়গায় সাত দশমিক ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে এবার।
ব্যাংক খাতে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে আট দশমিক ৫১ শতাংশ, ইন্স্যুরেন্সে এক দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং অন্যান্য আর্থিক খাতে ৯ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ। এর সবগুলোই আগের অর্থবছরের তুলনায় কম।
চলতি অর্থবছরে শুরুতে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে ফসলহানির পরও কীভাবে কৃষি উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি হলো জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ওটা গত অর্থবছরের হিসাবে এসেছে। চলতি অর্থবছরে নয়।’