নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রার্থী বা নির্বাচন কর্মকর্তারা কেউ আইনের বাইরে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নারায়ণগঞ্জে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন দেখতে চাই। যে পরিবেশটাকে নষ্ট করার চেষ্টা করবেন, তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। এটা আপনারা হোন অথবা আমার নিজের কর্মকর্তারা হোক আইনের বাইরে কেউ থাকবে না। আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ, আপনারা নিজেরা দয়া করে আইন ভঙ্গের চেষ্টা করবেন না, আইন হাতে তুলে নিবেন না।’
তিনি বলেন, ‘কাল যখন এখানে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তখন আপনাদের পাশের জেলায় চার চারটি মায়ের বুক খালি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যদি ঘটে, তাহলে আমার চেয়ে রাগান্বিত কেউ হবে না। আমি কোনো মায়ের বুক খালি হতে দেখতে চাই না। দয়া করে আপনারা আমাকে সহযোগিতা করেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা যে বুক খালি করেছেন, সেই বুকের দীর্ঘশ্বাস আপনাদের সারাটা জীবন তাড়া করবে। দয়া করে আপনারা এই দীর্ঘশ্বাস নিয়েন না। কোনো মানুষ বড় হতে পারে না, কোনো মানুষ ভালো হতে পারে না, কোনো মানুষ উন্নতি করতে পারে না কোনো মানুষের দীর্ঘশ্বাস কেড়ে নিয়ে। আপনি চেয়ারম্যান হবেন ঠিকই, আপনি মেম্বার হবেন ঠিকই। কিন্তু আপনার পেছনে হাজার হাজার মানুষের দীর্ঘশ্বাস আপনাকে নাড়াবে সারাটা জীবন।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বলেছেন আপনাদের এলাকা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন সাংঘাতিক ঝুঁকিপূর্ণ। আমরাও উপলব্ধি করেছি আপনাদের এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা এখানে পুলিশ, র্যাব, বিডিআর মোতায়েন করেছি। আমরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছি যেন তারা একটা সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে পারে। আপনারা যদি ঠিক থাকেন সত্যিকার অর্থে জোর গলায় বলতে পারি আমার র্যাবেরও দরকার নেই, বিডিআরও দরকার নেই, পুলিশেরও দরকার নেই।’
মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা ভালোভাবে কাজ কহলে আপনারা নিজেরাই একটি সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচনটা করতে পারেন। আগামী ১১ নভেম্বরের নির্বাচনে নিজেরা একটা সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন দিবেন। একটা অভয় আপনাদের কাছ থেকে নিয়ে যেতে চাই যে, নারায়ণগঞ্জবাসী যেন কোনো মায়ের বুক খালি না করে। আপনাদের জন্য একটু সুষ্ঠু পরিবেশ এ নির্বাচন কমিশন করবে।’
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, ঢাকা অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার, পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমানসহ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের নির্বাচনে অংশ নেয়া চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা।
