আদালত প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করায় প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার দুটি আবেদনই আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। সেই অনুমতি না থাকায় গতকাল রোববার মামলার আবেদন দুটি খারিজ করে দেন ঢাকার দুই মহানগর হাকিম।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়্যেদুল হক সুমন ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ইব্রাহিম খলিল ঢাকার হাকিম আদালতে মামলা করার ওই দুটি আবেদন করেন।
সুমনের আবেদনের শুনানি হয় ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়াউল হাসানের আদালতে। আর ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমান শোনেন খলিলের মামলার আরজি। দণ্ডবিধির ১২৩(এ), ১২৪(এ) ও ৫০০ ধারায় দায়ের করা এসব আবেদনে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও চাওয়া হয়। তবে শুনানি শেষে দুই আবেদনই খারিজ হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে ওয়াশিংটনে যাওয়া প্রিয়া সাহা গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউজে এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ওই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নিখোঁজ হয়েছেন।
তার ওই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় দেশের বিভিন্ন মহলে। প্রিয়া সাহা ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ’ করেছেন বলে মন্তব্য করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওই সম্মেলনে অংশ নেওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই মিথ্যা। বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট কথা বলেছেন তিনি। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ‘ক্ষুণের উদ্দেশ্যেই’ প্রিয়া সাহা এ ধরনের ‘বানোয়াট ও কল্পিত অভিযোগ’ করেছেন।
প্রিয়া সাহা ফিরলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে গতকাল ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের লিডার, গত রাতে আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছেন, সেটা হচ্ছে ‘এখানে তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রিয়া সাহা যা বলেছেন, শি শুড মেইক এ পাবলিক স্টেটমেন্ট।’ তিনি আসলে কী বলেছেন, কী বলতে চেয়েছেন, তার একটি পাবলিক স্টেটমেন্ট করা উচিত, তারও আত্মপক্ষ সমর্থনের একটা সুযোগ থাকা উচিত। তার আগে কোনো ধরনের মামলা বা আইনি প্রক্রিয়া শুরু না করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে মামলার দুই আবেদন খারিজ
