নিজস্ব প্রতিবেদক: বস্ত্র খাতের কোম্পানি এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পরিশোধযোগ্য নন-কনভার্টেবল প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যমতে, কোম্পানিটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধযোগ্য কিউমুলেটিভ নন-কনভার্টেবল আট কোটি ৭০ লাখ প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৮৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। যেখানে প্রতিটি শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রেফারেন্স শেয়ারের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট হারে বকেয়া ভিত্তিতে অর্ধ-বার্ষিকভাবে লভ্যাংশ প্রদান করা হবে। উত্তোলিত অর্থ কোম্পানির ব্লেন্ডেড সুতা উৎপাদনের জন্য আসন্ন প্রকল্প সম্প্রসারণ কর্মসূচিতে এবং উচ্চ মূল্যের ঋণ পরিশোধে একটা অংশ ব্যবহার করা হবে। সাধারণ সদস্য সভায় অনুমোদনের পাশপাশি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন সাপেক্ষে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এদিকে সম্প্রতি কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগকারীদের জন্য সর্বশেষ পাঁচ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন পাঁচ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল, যা ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ আলোচিত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি সর্বমোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৬ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৭৯ পয়সা। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে দুই টাকা ২৫ পয়সা (লোকসান)। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ২৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে।
বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠানটি ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত কারখানায় স্পিনিং ইউনিটের সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। এজন্য আনুমানিক ১৭৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে এনভয়।
জানা গেছে, কোম্পানিটির কারখানায় প্রতি বছর আনুমানিক তিন হাজার ৭১০ মেট্রিক টন কটন-পলিয়েস্টার-স্প্যানডেক্স কোর-স্পিন সুতার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন স্পিনিং প্রকল্প সম্প্রসারণ ইউনিট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রকল্পে তাদের ব্যয় হবে ১৭৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটিতে অত্যাধুনিক রিং স্পিনিং উৎপাদন সুবিধাসহ সব ইউরোপীয় এবং জাপানি মেশিনারিজ স্থাপন করা হবে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে কোম্পানির সংরক্ষিত আয় থেকে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা আর বাকি বাকি ১২০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে জোগান দেয়া হবে। প্রকল্পটির ঋণ-মূলধন অনুপাত প্রায় ৩২:৬৮। সম্প্রসারিত ইউনিটের ৯৮ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ স্থানীয় বাজারের ডেনিমের চাহিদা পূরণে ব্যবহার করা হবে। আর বাকি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সক্ষমতা রপ্তানি বাজারের জন্য নির্ধারিত থাকবে। আর প্রকল্পটিতে বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত আসতে সময় লাগবে সাত বছর।
বস্ত্র খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৪০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৬৭ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৩৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৭টি শেয়ার রয়েছে।