প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে অসম প্রেম করার অপরাধে সাইফুল ইসলাম রাজন নামে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছের সাথে বেঁধে বর্বোরচিত নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে মো.আলমগীর নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য (মেম্বার) মো.জয়নাল এর বাড়িতে।
গত শনিবার (৮জানুয়ারী) বিকেল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বালুচর ২নং ইউপির সাবেক ওয়ার্ড সদস্য মো.জয়নাল এর মো.আলমগীর তার বাড়িতে সাইফুলকে ডেকে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত নির্যাতন করে।
পরে এলাকাবাসী সিরাজদিখান থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজনকে উদ্ধার করে। পরে তাকে প্রথমে নিমতলা একটা প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেলে তারা গুরুতর আহত দেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক জয়নাল মেম্বারের বাড়ির মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয় সাইফুলের। ৩বছরের প্রেমের সম্পর্ক যখন গভীরতর হলে তারা দুজনে পালিয়ে যায়। তখন বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ের পরিবার। সাইফুলের লেখাপড়া ও পরিবারিক অবস্থা ভালো না থাকায় আপত্তি ওঠে মেয়ের পরিবার থেকে। গত ৮ জানুয়ারী মোবাইল ফোনে সাইফুলকে ডেকে নেয় মেয়ের চাচা আলমগীর হোসেন। সরল বিশ্বাসে সাইফুল যায় ওই বাড়িতে। পরে পূর্বপরিকল্পনা মতো সাইফুলকে শত মানুষের সামনে গাছের সাথে বেঁধে আদিযুগের বর্বরোচিত কায়দায় দুই ঘন্টা অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।
পরে এলাকাবাসী সিরাজদিখান থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সাইফুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
আহত সাইফুল ইসলাম রাজনের নানা জজ মিয়া বলেন, আমার নাতীর অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত খারাপ। আমরা তাকে বাঁচানোর জন্য ঢাকা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। তারা আমার নাতীকে পরিকল্পিতভাবে ফোন করে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অমানবিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। তার দুটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে। মাথায় আঘাত করে দুই স্থানে বড় বড় ক্ষত-জখম করেছে। এছাড়া লাঠিসোটা দিয়ে মেরে শরীরে নিলাফোলা করা হয়েছে। দুদিন ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আমার নাতী। আলমগীরের নেতৃত্বে তার ভাই ভাতিজারা মিলে একজন ছেলেকে হাত-পা বেঁধে আছর নামাজ ওয়াক্ত বিকাল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেরেছে। জানিনা আমার নাতীর ভাগ্যে কি আছে? আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছেএর সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত মো.আলমগীর বলেন, গত দুই মাস আগে সাইফুল আমার ভাতিজিকে অপহরণ করছে। পরে পুলিশ গিয়ে আমার ভাতিজিকে উদ্ধার করে আনছে। আর ছেলেকে আমরা জেলে দিয়ে দিছি। হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসেছে এক সপ্তাহ আগে। এসেই আমাদের হুমকি দিয়েছে। পরে শুক্রবার দিন খোঁজখবর লইয়া দেখছে আমাদের বাড়িতে লোকজন কম আছে। এ দেখে লোকজন নিয়ে ভাতিজিকে উঠায় নিতে আসে। তখন আত্মীয়-স্বজনরা ধরে তাকে গণধোলাই দিছে।
এ প্রসঙ্গে সিরাজদিখান থানার ওসি মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে সোমবার রাতে থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। আমরা আসামিদের আটকের জন্য চেষ্টা চলছে।