নিজস্ব প্রতিবেদক: প্লাস্টিক খাতের কোম্পানির করপোরেট করহার সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার পাশাপাশি রপ্তানি খাতে সমহারে উৎসে কর দশমিক ২৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)। গতকাল ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি সামিম আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘কভিড মহামারি মোকাবিলায় প্লাস্টিক সেক্টর নিরলস কাজ করেছে এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ফেস মাস্ক, ফেস সিল্ড, গগলস, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার, পিপিই, জীবাণুনাশক ওষুধের বোতল ও বিভিন্ন ওষুধের প্যাকেজিংয়ের জন্য প্লাস্টিক ব্যাপকভাবে প্রয়োজন হয়। আমাদের শিল্পকারখানাগুলো দিনরাত উৎপাদন করে সরকারের বিভিন্ন হাসপাতালে সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখছে।’
বিপিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘বর্তমানে সারাদেশে প্লাস্টিকের প্রায় পাঁচ হাজার ৩০টির বেশি ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। অভ্যন্তরীণভাবে বর্তমানে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব দিয়ে থাকে, রপ্তানি হয় প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের মতো। প্লাস্টিক সেক্টরে এরই মধ্যে প্রায় ১২ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।’
এ সময় ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে প্লাস্টিক খাতের জন্য কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন সামিম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘রপ্তানি খাতে উৎসে কর এবং করপোরেট করহার খাতভেদে বিভিন্ন হারে ধার্য করা আছে। সব রপ্তানি খাতে সমহারে উৎসে কর দশমিক ২৫ শতাংশ এবং করপোরেট করহার সমতায়ন করে ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ ধার্য করার প্রস্তাব করছি। এতে রপ্তানি বাণিজ্যে আগ্রগতি হবে, নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।’
এ সময় দেশীয় উৎপাদিত প্লাস্টিক খেলনা সামগ্রীর ওপর আরোপ করা ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান বিপিজিএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘খেলাধুলা শিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা করে। তাই শিশুদের কথা চিন্তা করে হলেও খেলনার ওপর আরোপ করা ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, দেশীয় খেলনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্র। এগুলোর ভ্যাট দেয়ার সক্ষমতা নেই। ভ্যাটের খাতাপত্র মেইনটেইন করারও সামর্থ্য নেই। ১৫ শতাংশ ভ্যাটের কারণে পণ্যের দাম বাড়ায় বিদেশি নি¤œমানের পণ্য বাজারে আসছে। প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা ক্রোকারিজ (প্লাস্টিকের তৈজসপত্র) আইটেমের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার, ওষুধ, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি খাত, তৈরি পোশাক খাতসহ অন্য শিল্প খাতের সঙ্গে প্লাস্টিক খাতেও কর অবকাশ সুবিধা সম্প্রসারণের দাবি জানান। এছাড়া বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ, বিটিটিএলএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানের মতোই যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক রেয়াতি সুবিধা-সংক্রান্ত এসআরও জারি করার অনুরোধ জানান। প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা অ্যালু, অ্যালু বটম ফয়েল ও অ্যালুমিনিয়াম ব্লিস্টার ফয়েলের বর্তমান শুল্কহার পাঁচ থেকে কমিয়ে এক শতাংশ করা ও ব্যবসায়ীদের ওপর টার্নওভারভিত্তিক ধার্য করা আয়কর দশমিক ২৫ শতাংশ চূড়ান্ত আয়করের হিসাবে সমন্বয় করার সুযোগ চান।
সংবাদ সম্মেলনে বিপিজিএমইএ’র সহসভাপতি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, কেএম ইকবাল হোসেন, কাজী আনোয়ারুল হক, পরিচালক মোসাদ্দেকুর রহমান নান্নু, মো. শাহজাহান, এটিএম সাঈদুর রহমান বুলবুল, মো. এনামুল হক, আমান উল্লাহ, সাবেক সভাপতি এএসএম কামাল উদ্দিন ও ফেরদৌস ওয়াহেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।