নিজস্ব প্রতিবেদক: প্লেসমেন্ট শেয়ার বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) পূর্ব ইস্যুকৃত শেয়ারে লক-ইন দু’বছর করে পাবলিক ইস্যু রুলসের সংশোধনীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রসপেক্টাসের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রকাশের দিনের পরিবর্তে এটি লেনদেন শুরুর দিন থেকে গণনা করা হবে। তবে প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর পরে আইপিও অনুমোদনে চার বছরের বেশি সময় লাগা কোম্পানির ক্ষেত্রে এক বছর লক-ইন করা হয়েছে। কমিশনের গতকালের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তা পরিচালক ও ১০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারণকারীদের জন্য তিন বছর লক-ইন প্রযোজ্য হবে। এছাড়া আইপিওর চার বছরে পূর্বে ইস্যুকৃত শেয়ারে এক বছর, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে এক বছর ও বাকি অন্যসব শেয়ারে দুই বছর লক-ইন রাখা হবে।
এর আগে ২৯ এপ্রিল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এক বৈঠকে আইপিওকালীন সব শেয়ারে তিন বছর লক-ইন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিএসইসি।
পাবলিক ইস্যু রুলসের সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রস্তাবিত দরেই শেয়ার কিনতে হবে নিলামে অংশগ্রহণকারীদের। এছাড়া যে পরিমাণ শেয়ার কেনার জন্য দর প্রস্তাব করবে, সেই পরিমাণ কিনতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে নিলামে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত শেয়ার সম্পূর্ণ বিক্রি না হলে, সেই ইস্যু বাতিল করা হবে। এ পদ্ধতিতে বিডারদের নাম ও তাদের প্রস্তাবিত দর প্রদর্শন করানো যাবে না। আর বিডিংয়ের জন্য নিলামকারীদের শতভাগ অর্থসংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে শেয়ার সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবকারী থেকে বিতরণ শুরু হবে, যা ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে নামবে এবং যে মূল্যে বিতরণ শেষ হবে, সেটাই কাট-অফ প্রাইসে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সেই মূল্য থেকে ১০ শতাংশ কমে শেয়ার ক্রয় করবেন। আর কাট-অফ প্রাইসে যদি একাধিক বিডার থাকে, তাহলে যে বিডার আগে বিড করবেন, তাকে আগে শেয়ার দেওয়া হবে।
অন্যদিকে কমিশন বুক বিল্ডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হবে। আর ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
এদিকে আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে কোটা সুবিধা পেতে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ থাকতে হবে। এই বিনিয়োগের পরিমাণ কী হবে, কমিশন তা প্রত্যেক পাবলিক ইস্যুর সম্মতিপত্রে উল্লেখ করবে। অন্যথায় সংরক্ষিত শেয়ারের কোটা সুবিধা পাবেন না। পূর্বের ইস্যুকৃত মূলধনের ৮০ শতাংশ ব্যবহার না করে পাবলিক ইস্যুর প্রস্তাব করা যাবে না।
আইপিওতের ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা বা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ উত্তোলন করতে হবে। এক্ষেত্রে যেটির পরিমাণ বেশি, সেই পরিমাণ তুলতে হবে। আর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৭৫ কোটি টাকা বা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ উত্তোলন করতে হবে। এক্ষেত্রেও যেটির পরিমাণ বেশি, সেই পরিমাণ উত্তোলন করতে হবে।
ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে সম্মিলিতভাবে আবেদন ৬৫ শতাংশের কম হলে ইস্যু বাতিল করা হবে। আর ৬৫ শতাংশের বেশি এবং ১০০ শতাংশের কম হলে, বাকি শেয়ার অব লেখক (আন্ডাররাইটার) গ্রহণ করবে।