নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে ঢোকার মুখেই বাঁশ দিয়ে কয়েকটি প্রবেশপথ বানানো হয়েছে। সেখানে হাতে টিকিট পরীক্ষা করার মেশিন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রেলের টিটিই কর্মকর্তারা। তাদের ওই মেশিনে টিকিট স্ক্যান করার পর তবেই যাত্রীরা ঢুকতে পারছন প্ল্যাটফর্মে।
আগাম টিকিটে ঘরমুখী মানুষের ট্রেনে করে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার। এই যাত্রায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিন স্তরের পরীক্ষা শেষে তবেই যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে দিচ্ছে।
টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে রেলওয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে। তাই অন্যবারের চেয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের চিত্র আলাদা। গতকাল বুধবার সকালের দিকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনে খুব বেশি ভিড় দেখা যায়নি। তবে দুপুরের পর স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে।
স্টেশনের প্রবেশমুখে টিকিট পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা এএইচএম সাজ্জাদুল বলেন, ‘এখনও টিকিট ছাড়াই স্টেশনে চলে আসছেন অনেকে। কেউ আসছেন অন্যের টিকিট নিয়ে। আজকে আমরা অনেকেকে জরিমানা করেছি, তাদের বুঝিয়েছি নিজের টিকিট নিজে নিজে নিয়ে আসার জন্য। পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। কালোবাজারিদের কোনো দৌরাত্ম্য নেই। খুব শৃঙ্খলার সঙ্গে যাত্রীরা যাচ্ছেন।’”
রাজশাহীগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেসের যাত্রী হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান মাহিন বলেন, ‘এবার অনলাইনে টিকিট কিনেছি। ফলে একটা ভোগান্তি কম হয়েছে। স্টেশনেও তেমন ঝামেলা নেই। শেষ পর্যন্ত রেলওয়ে এটা ধরে রাখতে পারলেই হয়।’”
তবে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি ছাড়ে বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে।
কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘সকালে রংপুর এক্সপ্রেস এবং সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন কিছুটা দেরি করে ছেড়েছে। ওই ট্রেন ঢাকায় এসেছে দেরিতে। এছাড়া আর সবকিছুই স্বাভাবিক।’”
এদিকে বুধবার ঈদ শেষে ফিরতি ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রিও শুরু হয়েছে। এদিন পাওয়া যাচ্ছে ১৩ এপ্রিলের ফিরতি টিকিট।
রেলের ওয়েবসাইট ও টিকিট বিক্রির প্ল্যাটফর্ম সহজডটকমে সকাল ৮টা থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে। বেলা ২টা থেকে বিক্রি হয় পূর্বাঞ্চলীয় ট্রেনের টিকিট। আগের মতোই সব টিকিট পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে।
বৃহস্পতিবার মিলবে ১৪ এপ্রিলের টিকিট, ৫ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৫ এপ্রিলের টিকিট, ৬ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৬ এপ্রিলের টিকিট, ৭ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৭ এপ্রিলের টিকিট, ৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৮ এপ্রিলের টিকিট এবং ৯ এপ্রিল বিক্রি হবে ১৯ এপ্রিল ট্রেন যাত্রার ফিরতি অগ্রিম টিকিট।
আগামী ১১ এপ্রিল ঈদের সম্ভাব্য দিন হিসাব করে ঈদযাত্রার সূচি সাজিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত ১৩ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে ঈদের আগাম টিকিট বিক্রির সূচি ঘোষণা করেন রেলওয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার সাহাদাত আলী।
সূচি অনুযায়ী গত ২৪ মার্চ থেকে ঘরমুখো মানুষের জন্য অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করে রেল। ওইদিন দেয়া হয় ৩ এপ্রিলের টিকিট। এভাবে পর্যায়ক্রমে ৩০ মার্চ বিক্রি হয় ৯ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করবে রেলওয়ে।
এবার ঈদের আগে সারাদেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনের ৩৩ হাজার ৫০০টি টিকিট বিক্রি হবে। ঈদ উপলক্ষে সারাদেশের বিভিন্ন রুটে আট জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ সহযোগিতা চান। সূত্র: বাসস।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ইতোমধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীন সহায়তা করুক।
নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা চীনা রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চল এতদিন অবহেলিত ছিল। কারণ, আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো সরকারই এ এলাকার উন্নয়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
এ সময় চীনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।
ইয়াও ওয়েন শেখ হাসিনাকে আগামী জুলাইয়ে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানালে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।