প া ি খ লালশির ট্রগোন

পাখি দেখতে অনেকেই পছন্দ করেন। নানা জাতের পাখির সঙ্গে পরিচিত হতে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণও করে থাকেন তারা। তাছাড়া ভ্রমণের স্থানগুলোয় যখন নানা জাতের, নানা রঙের পাখি বিচরণ করতে দেখা যায়, তখন মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ভাবুক আর বিমোহিত হন পর্যটকরা। প্রাণোচ্ছল হয়ে ওঠে তাদের মন। এমন পরিবেশ ভ্রমণপিপাসুদের বারবার না টেনে কী পারে! তাছাড়া এসব নানা জাতের পাখিদের মধ্যে কিছু পাখি আছে যাদের ভ্রমণ স্থান ছাড়া অন্য কোথাও দেখা যায় না। আবার ভ্রমণের স্থানগুলোতেও যখন-তখন দেখা যায় না। অর্থাৎ এসব পাখি দেখাও ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এমনই একটি পাখি ‘লালশির ট্রগোন’। পাখিটিকে সিলেটের মাধবকুণ্ডের ইকোপার্কে দেখা যায়। পাখিটি সবসময় অবস্থান করে গভীর ও নির্জন জঙ্গলে। পাহাড়ের চূড়া ও উঁচু গাছের ডালে বসে থাকতে দেখা যায় এদের।
লালশির ট্রগোনের ইংরেজি নাম ‘রেডহেডেড ট্রগোন’। বৈজ্ঞানিক নাম ‘হারপ্যাকটেস এরিথ্রোকেফালার্স’। গোত্রের নাম ‘ট্রগোনিদি’। বাংলায় এর কোনো নাম না থাকায় আমাদের দেশের পাখি গবেষকরা পাখির ধরন অনুযায়ী নাম দিয়েছেন ‘লালশির ট্রগোন’। বিশ্বে এ পাখি বিপদমুক্ত হলেও বাংলাদেশে এরা সংকটাপন্ন।

বিবরণ
লালশির ট্রগোন লম্বায় ৩৩ থেকে ৩৬ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। গায়ে লাল পালকের আধিক্য রয়েছে। বিশেষ করে মাথা, ঘাড় ও বুক লাল। দেহের নিচ থেকে লেজ পর্যন্ত সাদা-কালো মিশ্রিত আড়াআড়ি রেখা রয়েছে। বলা যায়, সাদা-কালো খাঁজকাটা। বাহারি সাজের লেজটা দেখতে বেশ সুন্দর। দেহের তুলনায় কিছুটা বড়। ডানার ওপরও
সাদা-কালো রেখায় আবৃত। পিঠের ওপর দিয়ে মালার মতো সাদা লাইন রয়েছে। ঠোঁট ও চোখ বেগুনি নীল, পা হালকা বেগুনি। স্ত্রী পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। এদের মাথা, বুক, ঘাড় থেকে লেজ পর্যন্ত কমলা-পাটকেলে আবৃত।

স্বভাব
ট্রগোন নির্জনতাপ্রিয়। তাই একা থাকতে পছন্দ করে। সিলেটের গহীন জঙ্গলে এদের এককভাবে উড়তে দেখা যায়। এরা ডাকে কিউ-কিউ সুরে। খায় জঙ্গলের পোকামাকড় ও ফলমূল। ঘর বেঁধে থাকতে পছন্দ করে না। মানুষকে দেখলে দ্রুত লুকিয়ে পড়ে।

প্রজনন
প্রজননের সময় হলেই ঘর বাঁধে। গহীন অরণ্যে গাছের কোটরে দুই থেকে চারটি ডিম পাড়ে এরা। স্ত্রী-পুরুষ পালা করে ডিমে তা দেয়। ডিম ফুটতে সময় নেয় ২০ থেকে ২২ দিন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০