বাড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে আর্থিক হিসাব-নকাশ পর্যন্ত নানা ধরনের কাজে প্রয়োজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ হিসাবরক্ষক বা ব্যবস্থাপক। এখন শুধু প্রাতিষ্ঠানিক সনদ থাকলেই ভালো চাকরি হয় না। এর সঙ্গে দরকার পেশাগত কিছু সনদও। এমনই এক ডিগ্রি ‘সিএমএ’।
সিএমএ হচ্ছে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস। ব্যবস্থাপনা আর হিসাব শাখায় দক্ষ পেশাজীবী তৈরির লক্ষ্যে এ ডিগ্রি দিয়ে থাকে দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি অভিজাত পেশা।
সিএমএ ডিগ্রিধারীর অনেক চাহিদা রয়েছে। এ ডিগ্রি সম্পন্ন করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমা, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, টেলিফোন কোম্পানি, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিদেশেও চাকরির ভালো সুযোগ রয়েছে।
যোগ্যতা
প্রতিষ্ঠানটিতে বছরে দুটি সেশনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়Ñজানুয়ারি থেকে জুন ও জুলাই থেকে ডিসেম্বর। এখানে দুটি পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারে। ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট ও গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট।
ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট পদ্ধতিতে ভর্তি হতে চাইলে এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষা মিলিয়ে জিপিএ-৮ পেতে হবে। আর গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট পদ্ধতিতে ভর্তি হতে যে কোনো বিভাগ থেকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হলেই চলে। এসএসসি থেকে স্নাতক পর্যন্ত পরীক্ষায় ফল লাগবে কমপক্ষে ছয় পয়েন্ট। তবে যাদের বাণিজ্যে স্নাতক (সম্মান), বিবিএ বা এমবিএ ডিগ্রি আছে, তারা ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি ভর্তি হতে পারবেন। স্নাতক (পাস) কোর্সে প্রথম শ্রেণি থাকলেও সরাসরি ভর্তি হওয়া যাবে।
পড়াশোনা ও কোর্স পদ্ধতি
সিএমএ কোর্সটি দুটি পদ্ধতিতে পড়ানো হয়। একটি কোচিং; অন্যটি করেসপনডেন্স পদ্ধতি। যারা কোচিং পদ্ধতিতে ভর্তি হবেন, তাদের নিয়মিত ক্লাস করতে হবে। নিয়মিত ক্লাস টেস্ট দিতে হবে। আর করেসপনডেন্স কোর্সের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস করতে হয় না। শুধু অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলেই হয়। তাই যারা চাকরিরত, তাদের জন্য এ করেসপনডেন্স পদ্ধতিটি সহজ। শিক্ষার্থীদের ছয় মাসে একটি লেভেল সম্পন্ন করতে হবে। কোর্সটিতে ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট ছাত্রছাত্রীদের পাঁচটি লেভেল ও গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট ছাত্রছাত্রীদের চারটি লেভেল সম্পন্ন করতে হবে। এ লেভেলগুলোর মধ্যে রয়েছে নলেজ লেভেল, বিজনেস লেভেল ও প্রফেশনাল লেভেল ১, ২ ও ৩।
যে বিষয়গুলো পড়ানো হয়
সিএমএ করার জন্য পড়তে হয় ২০টি বিষয়। ফাউন্ডেশন লেভেলে পড়তে হবে হিসাববিজ্ঞান নীতি, ব্যবসায় যোগাযোগ ও অফিস ব্যবস্থাপনা, কোয়ানটেটিভ কৌশল, ব্যবসায় অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। আর প্রফেশনাল লেভেল-১-এ পড়তে হবে ইন্টারমিডিয়েট ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং, উৎপাদন ব্যয় হিসাব, ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ব্যবস্থাপনা এবং তথ্যপ্রযুক্তি। এছাড়া প্রফেশনাল ২, ৩ ও ৪ লেভেলে আরও ১২টি বিষয় পড়তে হবে। এসব বিষয় পড়িয়ে থাকেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
ভর্তি ফি
ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট পদ্ধতির ছাত্রছাত্রীদের নলেজ লেভেলে ভর্তি ফি দিতে হবে ২০ হাজার ৬০০ টাকা। আর গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে বিজনেস লেভেলের জন্য ২৪ হাজার ৫০০ টাকা ফি দিতে হবে। প্রফেশনাল লেভেল ১, ২ ও ৩-এর জন্য ফি লাগবে যথাক্রমে ৮০০০, ১২০০০ ও ১৬০০০ টাকা।
বিস্তারিত জানতে
ভর্তি ও অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করতে পারেন আইসিএমএবির ঢাকাসহ দেশের অন্য শাখাগুলোয়। সারা দেশে ঢাকাসহ তাদের পাঁচটি শাখা রয়েছে।। এছাড়া অন্য শাখাগুলোর ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানতে ভিজিট করতে পারেন www.icmab.org.bd ঠিকানায়।
শিপন আহমেদ
তথ্যসূত্র:www.icmab.org.bd