Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 4:42 pm

ফজলে রাব্বীর মৃত্যু দেশের জন্য বিরাট ক্ষতি: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফজলে রাব্বী ডেপুটি স্পিকার হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দল পরিবর্তন করেও কিন্তু জয়ী হন। একটি জায়গা থেকে বারবার জয়ী হওয়া অর্থাৎ তার নিজস্ব জনপ্রিয়তা, মানুষের সঙ্গে তার গ্রহণযোগ্যতা, সেটা অতুলনীয়। যেকোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা তিনি অর্জন করতে পেরেছিলেন। তার এ চলে যাওয়ার ফলে আমরা ভালো দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হারালাম। এ মৃত্যু দেশের জন্য বিরাট ক্ষতি।

গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত আনা শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন।

চলতি সংসদের সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়। এর আগে ফজলে রাব্বীসহ মৃত্যুবরণকারীদের সম্মানে দুই মিনিট নীরবতা পালন ও মরহুমদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ফজলে রাব্বী মিয়া সাতবার এ সংসদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার ছাত্র রাজনীতি থেকে যাত্রা শুরু। তিনি ছাত্রলীগ করেছেন, যুবলীগ করেছেন ও আওয়ামী লীগ করেছেন। একটা সময় তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। সেখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য থাকার সময় আমার সঙ্গে মাঝেমধ্যে তার দেখা হতো, কথা হতো। তিনি ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসতে চাইতেন। আমি তাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসলাম। বলেছিলাম- আপনি আসেন, আসল জায়গাটিতে চলে আসেন। তিনি ঠিকই ফিরে এলেন। তাকে আমরা ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করলাম।

ফজলে রাব্বীর নির্বাচনী এলাকা বন্যাকবলিত ও দুর্ভিক্ষপীড়িত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ওই এলাকার মানুষের সার্বিক উন্নয়নে তিনি সবসময় আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের যে অঞ্চলগুলো মঙ্গাপীড়িত ছিল গাইবান্ধা তার মধ্যে একটি। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পদক্ষেপের ফলে কখনও মঙ্গা দেখা দেয়নি। আমরা এলাকার উন্নয়নে যথেষ্ট কাজ করছি। নদীভাঙন রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। তবে আরও উন্নয়ন দরকার। সংসদে তিনি নিজের এলাকার উন্নয়নে কথা বলতেন। তার মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ, একজন সামাজিক মানুষের মৃত্যু আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতির।

সরকারপ্রধান বলেন, দীর্ঘদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন। সর্বশেষ তিনি আমেরিকায় চিকিৎসায় ছিলেন। প্রতিদিন তার স্বাস্থ্যের খবর পেতাম। সত্যি কথা বলতে হাসপাতাল থেকে ভালো খবর কখনও আসেনি। আস্তে আস্তে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে কষ্ট নিয়েই তিনি চলে গেছেন। আমরা ভালো দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হারালাম। এই মৃত্যু দেশের জন্য বিরাট ক্ষতি হলো।

শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন- আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মাহবুব আরা গিনি, আ স ম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, মসিউর রহমান রাঙ্গা।

গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ফজলে রাব্বী মিয়া।