ফরিদপুরের পাটের ভাল ফলনের আশা

কে এম রুবেল, ফরিদপুর: ফরিদপুরে এবার পাটের ভালো আশা করছেন চাষিরা। তবে আবাদের শুরুতেই নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে কৃষক। বিশেষ করে মাহামারি করেনাভাইরাসের কারণে দিনমুজুরের (শ্রমিক) সংকটে পাট খেত নিড়ানি দিতে পারছেন না তারা।

এছাড়া বিছা ও ছ্যাঙ্গা পোকার আক্রমণেও তারা দিশেহারা। পাটের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের বিভিন্ন জনপদে ঘুরে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

### মুজুর সংকট ও পোঁকার আক্রমণে বিড়ম্বনায় চাষি

দেশে প্রতিবছরই পাটের উৎপাদনে শীর্ষে থাকে ফরিদপুর জেলা। এজন্য এ জেলার ব্রান্ডিং পণ্যও এ পাট। ‘সোনালী আশে ভরপুর, ভালবাসি ফরিদপুর’ এটি হচ্ছে জেলার ব্রান্ডিং-স্লোগান। উর্বর মাটি ও অনুকুল আবহাওয়ার কারণে এখানকার কৃষক বংশ পরম্পরায় এই পাটের আবাদ করে আসছেন।

ফরিদপুরের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ইতোমধ্যে পাট আবাদ হয়েছে প্রায় ৮২ হাজার ৯৯৬ হেক্টর জমিতে। পেঁয়াজ তোলার পরপরই গত এপ্রিল মাসের মাঝামঝিতে পাটচাষীরা বীজ রোপন সম্পন্ন করেন।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ পাটের খেত। যে দিকে চোখ যায় শুধু পাট আর পাট। দুর থেকে মনে হয় সবুজের সমারহ। পাট আবাদের শুরুতেই আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় ভাল ফলন আশা করছে চাষিরা। জেলার বিস্তীর্ণ জমিতে এখন হাটু সমান পাটের চারা শোভা পাচ্ছে। এদিকে বিভিন্নস্থানে পাট গাছে পোকার আক্রমনও দেখা গেছে।

নগরকান্দার কাইচাইল ইউনিয়নের কৃষক নুরুন্নবী বলেন, ‘এইবার পাটের ভাব খুবই ভাল। এহন জমিতে নিড়্যানি দিয়া দরকার। কিন্তু, করোনার কারণে কিষ্যাণ পাইতেছি না। তিনি বলেন, গেছেবার ৪০০ টাকায় যাগের নিছিলাম তারা এইবার ৬০০ টাকা চায়। তাও আবার আগাম টাকা দিতে হবি।’

ওবায়দুর নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘জমিতে নিড়্যানি দিতে দেরি হইয়্যা যাইতেছে। পোঁকা লাইগ্যা পাতা খাইয়্যা ফেলতেছে। তিনি বলেন, সময়মতো জমিতে নিড়্যানি না দিলি আলোবাতাস ঢুকে না। গাছ ঘন হইয়্যা যায়। বড়ও হয়না। পরে জমিতে ঢুকতেও কষ্ট হয়।’

ইছহাক খন্দকার নামে আরেকজন কৃষক বলেন, এবার পাট চাষে খরচ বেড়ে যাবেনে। বীজ-সার বাদেও অনেক খরচ। তিনি বলেন, পাট নিড়্যানোর পরে আবার বাছ দিতে হয়। তারপর পাট কাটা, জাগ দেওয়া, বাছা এভাবে নানা খরচ। এরপর সার দিতে হয় দুই-তিনবার। আবার পোকার বিষও দিতে হয়। এবার ভাল পাটের দাম কমপক্ষে আড়াই হাজার টাকা নির্ধারণ ও সারের দাম কমানোর দাবি জানান এসব কৃষক।

ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, একইসাথে সবাই পাট চাষ করায় সবারই গাছের পরিচর্যার প্রয়োজন হয়।

করোনার কারণে এবার তাদের কৃষাণ পেতে সমস্যা হচ্ছে। পাট গাছ ছোট থাকতেই তারা যেনো জমিতে নিড়ানি দেয় সে পরামর্শ দিচ্ছি। তাতে পরবর্তীতে তাদের পাটের পরিচর্যার খরচ কমে যাবে।

বিছা পোকা ও ছ্যাঙ্গা পোকার আক্রমনের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই উপদ্রব প্রতিবছরেই কমবেশি লেগে থাকে। এটি পাট গাছের কমন পোকা। এ ব্যাপারে আমরা কৃষকদের কিভাবে পোকা দমন করা যাবে তার নির্দেশনা দিয়েছি। লিফলেটও বিতরণ করেছি। আমাদের পক্ষ হতে কৃষকদের সবধরণের সহযোগীতা করা হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০