ফরিদপুরে বন্যা সহনশীল আমন ধান চাষে সাফল্য

কেএম রুবেল, ফরিদপুর: বন্যা সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল অ্যারাইজ এজেড হাইব্রিড ধান চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন ফরিদপুরের চাষিরা। ফলন ভালো হওয়ার ফলে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। আর কৃষি বিভাগ বলছে, উচ্চফলনশীল হাইব্রিড ধানের এই জাতটির ফলন হয় হেক্টরপ্রতি প্রায় ১২ টন। অন্য যে কোনো ধানের চেয়ে এটি হেক্টরে দুই টনেরও বেশি। ফলে এ ধান চাষ করে কৃষকরা অধিক লাভবান হচ্ছেন বলে দাবি কৃষি বিভাগের।

জানা গেছে, সারা দেশে বন্যায় চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে ফরিদপুরের চাষিরা বায়ার ক্রপ সাইন্সের উদ্ভাবিত এজেড ৭০০৬ ধানের চাষ সাফল্য পেয়েছে। বন্যা সহনশীল হওয়ায় এ ধান লাগানোর পর ১২ দিন আট ফুট পানির নিচে ডুবে থাকার পরও কোনো ক্ষতি হয় না। পাশাপাশি এ ধান উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় এর জীবনকাল ১২০ থেকে ১২৫ দিন। আর ফলন ৩৩ শতাংশের বিঘায় ২৭ থেকে ২৮ মণ। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এ ধান চাষ ফরিদপুর অঞ্চলে।

জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে এক হাজার ৩৩০ জন চাষিকে বিনা মূল্যে এজেড ৭০০৬ ধানের বীজ দেওয়া হয়েছে। সে ধান রোপণ করার পর পরিপক্ব হওয়ায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

কৃষক আবুল কাশেম বলেন, ‘নতুন জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও হয়েছে ভালো। অন্য ধানের চেয়ে অধিক ফলন পেয়েছি। আগামীতে আমরা এ জাতের ধান বেশি করে চাষ করব বলে পরিকল্পনা করছি।’

বায়ার ক্রপ সাইন্সের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মানসুর রহমান বলেন, ‘এই ধান লাগানোর পর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেলেও নষ্ট হয় না। রোগ-বালাই কম, অধিক ফলন হয়। করোনাকালে আমরা এক হাজার ৩৩০ জনকে বিনা মূল্যে বীজ দিয়ে সহযোগিতা করছি।’

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি আমন মৌসুমে প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের আমন ধানের আবাদ হয়েছে।

এদিকে গত সোমবার বিকালে সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের রসিকনগর গ্রামে এজেড ৭০০৬ ধানের ওপর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আবুল বাসার মিয়া, বায়ার ক্রপ সাইন্স’র রিজিওনাল ম্যানেজার শামসুল আলম, আঞ্চলিক কর্মকর্তা মানসুর রহমান, উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. মুজাহিদুল ইসলাম। মাঠদিবসে শতাধিক কৃষক ও কিষাণি অংশগ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আবুল বাসার মিয়া বলেন, ‘ধান আমাদের প্রধান ফসল। আর সে কারণেই ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবাদ করে দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করতে হবে। এজেড ৭০০৬ ধানের হেক্টরপ্রতি ফলন ১২ টন, যা অন্য ধানের চেয়ে হেক্টরে দুই টন বেশি উৎপাদন হয়।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০