কেএম রুবেল, ফরিদপুর: গত বছর কভিড-১৯-এর কারণে দেশে এসে আটকে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী শামসুদ্দিন করিম বাবু। বিদেশে যেতে না পেরে বাড়ির পেছনের পতিত জমিতে গড়ে তোলেন সম্মিলিত খামার। সেই খামার থেকে ১৯ মাসেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন এ প্রবাসী। ফরিদপুরে তিনি এখন বেকার নারী-পুরুষের অনুপ্রেরণা। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের খামার গড়ে উঠলে কমবে বেকারত্ব, শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান হবে এবং আমিষের চাহিদা পূরণ হবে।
উচ্চশিক্ষিত বাবু জেলা শহরের চরকমলাপুর এলাকার বাসিন্দা। বেশিরভাগ সময় থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু করোনার কারণে বিধিনিষেধ থাকায় দেশটিতে যেতে পারেননি। তবে দমে না গিয়ে বাড়ির পেছনে পতিত জমিতে গড়ে তোলেন অর্ণব মডেল ফার্ম নামে একটি সম্মিলিত খামার।
বর্তমানে এ খামারে রয়েছে দেশি-বিদেশি কবুতর, দেশি মুরগি, বিদেশি সিল্কি মুরগি, রাজহাঁস, বেইজিং হাঁস, খাকি ক্যাম্বেল হাঁস, উন্নত জাতের ছাগল, ভেড়া, তিত, কোয়েল ও টারকিসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি। রয়েছে একটি দুগ্ধ খামার। গড়ে তুলেছেন মাছের খামারও। সব খামার দেখাশোনার জন্য রয়েছেন আলাদা কর্মচারী। খামারে কাজ করছেন ২৫ জন নারী-পুরুষ।
খামারের হিসাবরক্ষক মৌ মিতা ইসলাম বলেন, কভিডকালে সবকিছু যখন বন্ধ হয়ে যায়, কাজ হারিয়ে পথে পথে ঘুরছি, তখনই অর্ণব মডেল ফার্মের খোঁজ পাই। কাজ পেয়ে যাই। আমার সঙ্গে আরও অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা ভালো আছি এ ফার্মে কাজ করে। আমাদের সমাজে এ ধরনের নতুন উদ্যোগের প্রয়োজন।
খামারটির স্বত্বাধিকারী শামসুদ্দিন করিম বাবু বলেন, ‘করোনার সময় বাইরে থেকে আসার পর দেখলাম অনেক বেকার ছেলেমেয়ে আমার কাছে চাকরির জন্য আসছেন। এই শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে আমার পতিত পড়ে থাকা জমিতে এই ফার্ম গড়ে তুলি। ফার্ম করায় এখানে ২৫ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা এখানে কাজ করে তাদের পরিবার নিয়ে ভালোই আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শখের বসে কৃষিকাজ করতে এসে এখন বাণিজ্যের দিকে এগুচ্ছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে সফল হবো বলে আশা করছি। কৃষিকাজ সম্মানের কাজ ও আনন্দদায়ক।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নূরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, বাবুর খামারের কল্যাণে বেকারদের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা নিয়মিত খামার পরিদর্শন করে পরামর্শ দিচ্ছি।