ফরিদপুরে বাড়ছে ড্রাগন চাষ

ফরিদপুরের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগী। এজন্য বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে ড্রাগন চাষ। চাহিদা থাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ ফলের চাষ। সব ধরনের উঁচু জমিতে ড্রাগন চাষ করা যায়। তাই উচ্চ ফলনশীল ও অধিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন ড্রাগনের চাষ হচ্ছে ফরিদপুরের ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
মিষ্টি ও টক-মিষ্টি স্বাদের ড্রাগনের পুষ্টিগুণ অতুলনীয়। ডায়াবেটিস ও রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। শ্রীবৃদ্ধি ঘটায় শরীরের।
ক্যাকটাস প্রজাতির বিদেশি এ ফলের ছোট-বড় শতাধিক বাগান রয়েছে ফরিদপুরে। অনেকে বাড়ির সামনে ও বাড়ির ছাদে ড্রাগন ফলের বাগান করেছেন। চলতি বছর এর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। একই জমিতে ড্রাগন চাষের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে নানা ধরনের সবজি চাষ করছেন চাষিরা।
ড্রাগনের চারা রোপণের ১০ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে ফল তোলা যায়। এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে ফুল ধরে, শেষ হয় নভেম্বরে। ফুল ফোটার ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। নভেম্বর পর্যন্ত ফুল ফোটা ও ফল ধরা অব্যাহত থাকে।
হর্টিকালচার সেন্টারের সহযোগিতায় জামাল মুন্সী, বাবর আলী, বিমল রায়, জাকির হোসেন, ওহিদ সরদার, তুহিন শেখ, জাহাঙ্গীর মোল্লাসহ দু’শতাধিক চাষি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ড্রাগনের চাষ করে সফল হয়েছেন। এখানকার একেকটি ফলের ওজন ২৫০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ থেকে প্রায় ১৩০টি ফল পাওয়া যায়। সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে একটি গাছ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে।
জামাল মুন্সী বলেন, ১০ মাস আগে নিজ উদ্যোগে গ্রামের বাড়িতে ড্রাগনের বাগান করি। নিয়মিত পরিচর্যার কারণে ১০ মাসের মধ্যে আমার বাগানে ফল ধরেছে। আশা করছি, আগামীতে বাগানের সব গাছে ফল ধরবে।
বাউ ড্রাগন ফল-১ (সাদা) ও বাউ ড্রাগন-২ (লাল), এ দুটি জাত বাংলাদেশে চাষ করা হচ্ছে। বীজ ও কাটিং পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। উপযুক্ত যত্ন নিলে একরপ্রতি ছয় থেকে সাত টন ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে বাজারে এক কেজি ড্রাগন বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।
ফরিদপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ফরিদপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ড্রাগন। আমরা ৫০টি প্রদর্শনী করেছি। ২০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। চাষিরা এর সুফল পাচ্ছেন। তাদের উৎপাদিত ফল ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। আমরা চাষিদের বিনা খরচে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। কৃষক এ ফল চাষ করে খুশি।
সরকারি সহযোগিতা ও সঠিক মূল্য পেলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে ড্রাগন চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন এ অঞ্চলের কৃষক।

কেএম রুবেল, ফরিদপুর

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০