Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 2:05 pm

ফরিদপুরে ১৫৭২ পরিবার গৃহের ঠিকানার অপেক্ষায়

প্রতিনিধি, ফরিদপুর: সরকার ঘোষিত ‘মুর্জিব শতবর্ষে থাকবে না কোনো গৃহহীন’। এ লক্ষ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ এর আওতায় এবার ফরিদপুরের এক হাজার ৫৭২ পরিবারের গৃহহীনের অভাব ঘুচবে। আগামীকাল সারাদেশের সঙ্গে একযোগে গৃহগুলো হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ প্রকল্পের অধীনে জেলার ৯ উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এক হাজার ৫৭২টি ঘর। যার অধিকাংশই সম্পন্ন হয়েছে। আর এই কাজ তদারকিতে ব্যস্ত সময় পার করছে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছে সুবিধাভোগীরা। ইতোমধ্যেই এ সুবিধাভোগীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ফরিদপুরের ডেপুটি কালেক্টর (ডিসি) অতুল সরকার বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহার স্বরূপ এসব আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলায় উপকারভোগীদের মাঝে এ ঘর প্রাপ্তির খবরে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, তাদের এই আনন্দ অশ্রু আমাদের আগামীর পথচলায় প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে কাজটিকে এগিয়ে নিতে।’ তিনি জানান, ‘প্রথম পর্যায়ে ঘর দেয়া হয়েছে দুই হাজার ৩৫টি পরিবারকে। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে দেয়া হবে এক হাজার ৫৭২টি পরিবারকে।’

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ এক লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২.৮ ফুট প্রস্থের পাকা ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারের বিশেষ সংযোজন করা হয়েছে প্রতিটি ঘরে সামনে চারটি করে ফলদ বৃক্ষ রোপণ।

জেলায় আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৩৩ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে ‘স্বপ্ন নগর’। এ উপজেলার নির্বাহী অফিসার তৌহিদ এলাহী জানান, দেশের মধ্যে অন্যতম মডেল হিসেবে আলফাডাঙ্গার এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি ধরা হচ্ছে। ৩৩ একর জমির ওপর এ প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে ‘স্বপ্ন নগর’।

তিনি জানান, ‘এটি শুধু আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণই নয়, এখানে থাকছে কমিউনিটি হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ-মাদরাসা, মন্দির, হাটবাজার, কবরস্থান, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্রসহ বসবাসকারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এ স্বপ্ন নগরে ২৫০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে, যা সারাদেশের মধ্যে মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।’

স্বপ্ন নগরের আরেক নতুন বাসিন্দা সুনিল রায় ও যমুনা দম্পত্তি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। এখন নিজের ঘর ও জমি পেয়েছি, এর চেয়ে খুশি আর কীভাবে হওয়া যায়।’ এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি কাজের মান ঠিক রাখতে। এ কারণে দৈনন্দিন কাজের মাঝেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে সবসময়।’ তিনি বলেন, ‘এত কষ্ট করার পরে যখন হতদরিদ্র এই সুবিধাভোগীদের মুখে হাসি দেখি, তখন আমাদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।’