প্রতিনিধি, ফেনী : ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি ইস্যু নিয়ে মানববন্ধন-বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান ও সংবাদ সম্মেলন করেছে আসামিপক্ষ ও নুসরাতের পরিবার। গতকাল দুপুরে ফেনীতে এসব কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সকালে নুসরাত হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির স্বজনরা ফেনী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে তারা নুসরাতের ঘটনাকে আত্মহত্যা দাবি করে নিরপরাধ স্বজনদের নির্যাতন করে ফাঁসানোর জন্য পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুদারকে দায়ী করেছেন। তারা ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানান। পরে তারা ফেনী প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে তারা বনজ কুমারের বিচার দাবি ও নুসরাতের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার জন্য তার পরিবারকে দায়ী করে তাদের বিচার করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
তারা জানায়, নুসরাত জাহান রাফি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু পিবিআইসহ একটি মহল ঘটনাটিকে হত্যার নাটক সাজিয়ে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাদের ফাঁসিয়েছে। তাই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় বাতিল করে ঘটনা পুনঃতদন্তের দাবি তোলেন।
এর আগে ফেনী প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে নুসরাতের পরিবার অভিযোগ করেন, নুসরাতের হত্যা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি পক্ষ। তারা সোশাল মিডিয়াসহ নানাভাবে তাদের জড়িয়ে হয়রানি ও গুজব ছড়াচ্ছে। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সব তথ্য প্রমাণ সহকারে আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ রায়কে তারা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই এ নিয়ে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জারিত হয়ে কোনো উত্তর না দিয়ে তড়িগড়ি প্রেস ক্লাব মিলনায়তন ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল মাদ্রাসা থেকে নুসরাত জাহান রাফিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান। ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করলেও পরে সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই মামলায় একই বছরের ২৪ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়।