নিজস্ব প্রতিবেদক: বিসিএস পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করতে সরকারকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন দুই আইনজীবী। মানবাধিকার সংস্থা ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন’-এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও মোহাম্মদ কাওছার গতকাল রোববার এ নোটিশ পাঠান।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্টে দেখা যায়, ‘বাংলাদেশ কর্মকমিশনের সাবেক গাড়িচালক ও অন্য কর্মচারীরা কয়েক দশক ধরে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করে আসছে।’
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আবেদ আলীসহ কর্মকমিশনের এ পর্যন্ত ১৭ কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী ও অন্য কর্মচারীরা কীভাবে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের মাঝে টাকার বিনিময়ে বিতরণ করে প্রত্যেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তার বিবরণ দিয়েছেন।’
আবেদ আলী ও কর্মকমিশনের অন্য কর্মচারীদের কাছ থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের একটি তালিকা পুলিশ তৈরি করেছে বলে দাবি করা হয় নোটিশে।
সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা হচ্ছে বিসিএস। লাখ লাখ পরীক্ষার্থীর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা বিভিন্ন স্তরে নিবিড়ভাবে যাচাই-বাছাই করে একজন যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেয়া হয়। আর এই পুরো প্রক্রিয়ার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন। কর্মকমিশনের পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও পরীক্ষা কেন্দ্রে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কর্মকমিশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে বিসিএস পরীক্ষা প্রশ্নপত্র নিয়মিত ফাঁস হচ্ছে।
‘এর ফলে একদিকে যেমন অযোগ্য ও অদক্ষ ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ লাভের কারণে দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম বাড়ছে, একই সঙ্গে যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীর অভাবে সাধারণ জনগণ প্রজাতন্ত্রের কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই ফাঁসকৃত প্রশ্নে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতারক কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।’
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষায় ‘প্রতারণার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্ত’ বিসিএস কর্মকর্তাদের নাম, ঠিকানা ও বর্তমান পদবি উল্লেখ করে তালিকা তৈরি করে কর্মকমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে নোটিশে।
সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিয়ে এ পর্যন্ত পাওয়া বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় আর্থিক সুবিধা তাদের কাছ থেকে ফেরত নেয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও অনুরোধ জানানো হয়েছে।