নিজস্ব প্রতিবেদক: ফাইজারের নতুন ভেরিয়ান্টি কনটেইনিং ভ্যাকসিনে (ভিসিভি) তৃতীয় ও চতুর্থ বুস্টার ডোজ প্রয়োগ শুরু হবে এই সপ্তাহেই। কোভ্যাক্সের আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে ফাইজারের এই টিকার ৩০ লাখ ডোজ পেয়েছে সরকার।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এই টিকাটি নতুন উদ্ভাবিত টিকা এবং বিভিন্ন দেশে দেয়া হচ্ছে। বুস্টার ডোজ হিসেবে আমরা এই টিকাটি দেব।’
‘আমরা প্রায় ৩০ লাখ ডোজ টিকা ইতোমধ্যে পেয়েছি। তৃতীয় এবং চতুর্থ ডোজ আমরা এই টিকার মাধ্যমে দেব।’
এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সংবাদ সম্মেলন করে জানান দিলাম। এই সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে যাবে। আমরা টিকা ট্রায়ালের সম্পন্ন করেছি। ইমেডিয়েটলি দেয়া হবে।’
বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে কারা অগ্রাধিকার পাবে এমন প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তারা তৃতীয় ডোজ তারা পাবে। আর ক্রনিক রোগী যারা তারা, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই, গর্ভবতী মায়েদের এবং সম্মুখ সারির যোদ্ধা যারা চতুর্থ ডোজ পায়নি, তাদের টিকা দেয়া হবে।
ডব্লিউএইচও এই টিকার অনুমোদন দেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে আমাদের টিকাদানের জাতীয় কারিগরি কমিটি, তারও অনুমোদন ও মতামত রয়েছে। আমাদের ওষুধ প্রশাসনেরও অনুমোদন রয়েছে।’
‘আমরা ইতোমধ্যে ট্রায়ালের কাজও শেষ করেছি, যেখানে কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। আমরা সারাদেশে সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলায় যে টিকাকেন্দ্রগুলো আছে, সেখানে আমরা এই টিকা দেয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি।’
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে কভিড মহামারির সংক্রমণ শুরু হয়। সংক্রমণ প্রতিরোধে পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশে কভিড টিকার প্রথম ডোজ দেয়া শুরু হয়। বাংলাদেশ কিছু টিকা কিনেছে, কিছু কোভ্যাক্স এবং বিভিন্ন দেশ থেকে বিনামূল্যে পেয়েছে।
দেশে কভিড টিকার মজুত না থাকায় তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ দেয়া গত মার্চ মাসে স্থগিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রায় ৩৬ কোটির অধিক টিকা দিতে পেরেছি। প্রথম ডোজ ৮৮ শতাংশ, দ্বিতীয় ডোজ ৮২ শতাংশ এবং তৃতীয় ডোজ ৪০ শতাংশ দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা বেশ ভালো। গড়ে ৮৫-৯০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পেরেছি। বিশ্বে এই হার ৭২ শতাংশ।’
কভিডের সংক্রমণ ইদানীং কিছুটা বাড়লেও মহামারি মারাত্মক আকার ধারণ করার কোনো আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘আমি জেনেভা থেকে এসেছি। সেখানে দেখলাম একটি লোকও মাস্ক পড়েনি। সেখানে যে রোগী হচ্ছে না, দু-একটা করে তা নয়। আমাদের এখানেও দু-একটি করে রোগী পাচ্ছি। ইদানীং কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘কিন্তু হাসপাতালে তেমন কোনো রোগী নেই। যেহেতু টিকা সকলে নিয়েছেন, সে জন্য কোনো মারাত্মক আকার ধারণ করছে না কভিড।’
এরপরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলব, কভিড যেহেতু আছে আমাদের সতর্ক থাকাটা ভালো। যেভাবে বেশি লোকের সমাগম হয়, সেখানে মাস্ক পরতে পারলে ভালো।
কভিড মোকাবিলার জন্য যেসব অভিজ্ঞতা আমরা সঞ্চয় করেছি, সেগুলো আমাদের মনে রাখা উচিত।’