প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসীতে গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানায় আগুন লাগার পর থেকে অন্তত ১৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের স্বজনরা দাবি করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি তালিকা তৈরি করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। গতকাল সোমবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ১৭৪ জন নিখোঁজ থাকার একটি তালিকা করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (ঢাকা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম জানান।
তিনি বলেন, ‘স্বজনরা যারা দাবি করছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ রয়েছেন, যারা গতরাতে এই কারখানায় লুটপাট চলাকালে এসেছিলেন, আমরা তাদের একটি খসড়া তালিকা করেছি। এ মুহূর্তে তা যাচাই-বাছাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। স্বজনরা যারা ক্লেইম করছেন তাদের নাম-ঠিকানা লিখে রাখছি। এখন পর্যন্ত এ তালিকা ১৭৪ জন পর্যন্ত হয়েছে। অন্তত ১২ জন নিখোঁজ ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের নিখোঁজ সদস্যরা রোববার রাতে গাজী টায়ার কারখানায় লুটপাট চলাকালে ভেতরে ছিলেন। এরপর রাতভর তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি; মোবাইল ফোনও বন্ধ।
কারখানাটির ছয়তলা একটি ভবনে বেলা দেড়টায়ও আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছিল। আগুন জ্বলতে থাকা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন মনি আক্তার নামে এক নারী। কারখানাটির অদূরে কলাবাগ এলাকার বাসিন্দা মনি জানান, তার স্বামী মো. রাশেদ রোববার সাড়ে ৮টায় গাজী টায়ার কারখানায় এসেছিলেন। ওই এলাকারই আরেক বাসিন্দা তখন তার সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু রাতে তার স্বামী বাসায় না ফেরায় তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও তা বন্ধ পান।
তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সারারাত ধরে তাকে খুঁজছি; পাইনি।’
এসব কথা বলার একপর্যায়ে ‘আমি এখন কী করমু’ বলে কাঁদতে কাঁদতে রাস্তায় বসে পড়েন ওই নারী।
এছাড়া একটি সিমেন্ট কারখানার কর্মী আব্দুর রহমান (৩০), ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. সুজন (২৮), তার বোন মাফিয়া বেগম (৩০), বোনের স্বামী মো. রতন (৩৫), বড়ালু এলাকার রাজমিস্ত্রি হাসান আলী (৩২), তার দুই বন্ধু অহিদ (৩২) ও রুবেল (৩০) নামে একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন।