নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি ফারমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একেএম শামীমকে কেন অপসারণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী গত রোববার এমডিকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন গতকাল। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত রোববার (২৬ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফারমার্স ব্যাংকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে আগামী সাত দিনের মধ্যে এমডিকে কেন অপসারণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
নোটিসে বলা হয়, ব্যাংকে তারল্য ব্যবস্থাপনা করতে এমডি ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণে নগদ জমা বা সিআরআরের এবং সংবিধিবদ্ধ জমা বা এসএলআরের অর্থ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকটি। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নতুন করে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। নোটিশে এসব বিষয়ের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ফারমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নিয়মের বাইরে বেশি ঋণ দিয়ে এসব ঋণ আদায় করতে পারছে না ব্যাংকটি। ফলে ব্যাংকটিতে বড় ধরনের তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। এদিকে এখন আর আমানত সংগ্রহে সাড়া পাচ্ছে না ফারমার্স ব্যাংক। গত সেপ্টেম্বর শেষে ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৩৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিতরণ করা ঋণের সাত দশমিক ৪৫ শতাংশই খেলাপি। মার্চ-জুন সময়ে ব্যাংকটি খেলাপি গ্রাহকদের থেকে মাত্র সাত কোটি টাকা আদায় করেছে। শীর্ষ ১০ খেলাপি গ্রাহকের কাছেই ব্যাংকটির পাওনা ১৩৪ কোটি টাকা।
জানা গেছে, সম্প্রতি তারল্য সংকটে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা আমানত চেয়ে চিঠি দিয়ে কোনো সাড়া পায়নি ব্যাংকটি। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে ৯৬ কোটি টাকা জোগান দেয় ব্যাংকটিকে। এর পরও গত বৃহস্পতিবার নিয়মমতো বাংলাদেশ ব্যাংকে সিআরআরের এবং এসএলআরের অর্থ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ফারমার্স ব্যাংক। এর আগে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ব্যাংকটিতে রাখা তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ আমানত সুদাসলে তুলতে গেলে কয়েক দফায় চেক ডিজঅনার হয়। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করেছিল ফারমার্স ব্যাংক।