Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 10:02 pm

ফিলিস্তিনিরা ঘাস খাচ্ছে, পান করছে দূষিত পানি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: হানাদি গামাল সায়েদ আল জামারা বলেছেন, একমাত্র ঘুমিয়ে পড়লেই তার সন্তানরা ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কষ্ট থেকে মুক্তি পায়। সাত সন্তানের জননী জামারা নিজের খাবারের জন্যও ভিক্ষা করছেন। একটু খাদ্যের সন্ধানে রাফার কর্দমাক্ত রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা গাজাবাসীর প্রায় সবার অবস্থা একই বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন বাস্তুচ্যুত নাগরিক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা।

গাজা যখন পূর্ণ মাত্রায় দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, তারা ক্ষুধার্ত থাকে যাতে তাদের শিশুরা যা পাওয়া যায় তা খেতে পারে।

ইসরায়েল গাজার খাদ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করছে এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ও অবরোধের ফলে গাজার গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য সরবরাহ মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এতে প্রায় ২২ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, জাতিসংঘের সংস্থাগুলোয় অনাহারে থাকা চার লাখ গাজাবাসীর ‘বড় অংশ’ দুর্ভিক্ষের মধ্যে রয়েছে।

ইসরায়েল-হামাসের ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গাজার ফিলিস্তিনিরা গণহারে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এলাকাগুলো ছাই ও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, যুদ্ধের কারণে পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, মারাত্মক রোগের ঝুঁকি থাকা সত্তে¡ও বোমা হামলায় চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন অনাহার এবং পানিশূন্যতা তাদের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।

গাজাবাসী পানি পেলেও তা পানের অযোগ্য। ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর রাস্তায় বসবাসকারী শিশুরা রুটির জন্য কাঁদছে এবং লড়াই করছে। অন্যরা ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি নিয়ে খাবারের সন্ধানে ঠান্ডার মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে বেড়াচ্ছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডবিøউএফপি) প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হুসেইন বলেন, যুদ্ধের আগেও গাজার প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজন খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল। ইসরায়েল ও মিসরের আরোপিত আংশিক অবরোধের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনিরা ১৭ বছর ধরে বসবাস করছে।

তিন সন্তানের বাবা হামুদা বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, অনেক আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব এখনও উত্তর গাজায় রয়েছেন, তারা প্রচুর কষ্ট ভোগ করছেন। তারা ঘাস খায় এবং দূষিত পানি পান করেন।