শেয়ার বিজ ডেস্ক: জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার জন্য সব ধরনের অর্থ সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউনাইটেড নেশন্স রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) নামে জাতিসংঘের ওই সংস্থাটিকে ‘অবিশ্বাস্যভাবে ত্রুটিপূর্ণ’ একটি সংগঠন হিসেবে অভিহিত করে সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি ‘সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ’ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটি। খবর বিবিসি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিথার নাওয়ার্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন বিষয়টি ‘সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ’ করছে এবং তারা ইউএনআরডব্লিউএতে আর কোনো অবদান রাখবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে তার দেশের জনগণের জন্য অপমানজনক বলে অভিহিত করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনা। তিনি বলেন, এ ধরনের শাস্তির মাধ্যমে তারা এ বাস্তবতা পাল্টাতে পারবে না যে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের আর কোনো ভূমিকা নেই এবং এটা কোনো সমাধানেরও অংশ নয়। এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের রেজুলেশনের প্রতি অবজ্ঞাও দেখানো হয়েছে।
এর আগে গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনি জনগণ ও পশ্চিম তীরের জন্য ২০ কোটি ডলারেরও বেশি সহায়তা কাটছাঁট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারও আগে জানুয়ারিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএতে দেওয়া সহায়তা বিপুল পরিমাণে কমিয়ে দেয় দেশটি। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে মার্কিন প্রশাসন ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফিলিস্তিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করার আর অধিকার রাখে না বলেও মন্তব্য করে ফিলিস্তিন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এ নতুন সিদ্ধান্ত এবং ইউএনআরডব্লিউএকে ‘অসংশোধনীয় ত্রুটিপূর্ণ’ উল্লেখ করাকে কেন্দ্র করে সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস গুনেজ টুইট বার্তায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইউএনআরডব্লিউএর স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও জরুরি সহায়তা কর্মসূচিকে ‘অসংশোধনীয় ত্রুটিপূর্ণ’ বলে সমালোচনা করাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করছি আমরা।’ তিনি আরও বলেন, মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সংস্থার এ কার্যক্রমগুলো সফলতার প্রমাণ রেখেছে। এর ফল পাওয়া গেছে মধ্যপ্রাচ্যে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, দাতা দেশগুলো ইউএনআরডব্লিউএর অর্জন ও মান নিয়ে বরাবরই প্রশংসা করে আসছে।
১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর লাখ লাখ স্থানচ্যুত ফিলিস্তিনির সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয় ইউএনআরডব্লিউএ। সংস্থাটি বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ৫০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক কাজে সহায়তা দিয়ে থাকে। সংস্থাটিতে যুক্তরাষ্ট্র একক বড় দাতা দেশ হিসেবে রয়েছে। ২০১৬ সালে দেশটি ৩৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে। এ অঞ্চলে ইউএনআরডব্লিউএর ৩০ শতাংশ কাজ হয় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থে।