শেয়ার বিজ ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের একটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে ১০ শিশুসহ অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার একটি চারতলা আবাসিক ভবনে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত বেশ কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর: বিবিসি, আল-জাজিরা।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা’র সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, হতাহত বহু মানুষকে ভবন থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তাদের নিকটবর্তী শহর বেইত লাহিয়ার ইন্দোনেশিয়ান পাবলিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ভবনটির ভেতরে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এটা থেকে আগুন লাগতে পারে।
মর্মান্তিক এ ঘটনার পর ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস শুক্রবার এক দিনের জন্য শোক ঘোষণা করেছেন। এ সময় ফিলিস্তিনের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের জরুরি সেবা বিভাগের পরিচালক ডা. সালাহ আবু লায়লা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, এক রান্নাঘরের গ্যাস লিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা পাওয়া গেছে। ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, ওই ভবনের একটি পরিবার তাদের আত্মীয়দের মধ্যে একজনের বিদেশ থেকে ফেরা উপলক্ষে অনুষ্ঠান উদ্যাপন করছিল। ঘটনাস্থলে ছুটে আসা স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘জেনারেটর চালানোর’ জন্য ভবনটিতে পেট্রল সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ টুইটে বলেছেন, ‘মানবিক কারণে আহতদের (ইসরাইলি) হাসপাতালগুলোয় নিতে’ তার কর্মীরা সহায়তা করবে। গাজার আটটি শরণার্থী শিবিরের মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া একটি। গাজায় বিদ্যুতের তীব্র ঘাটতি থাকায় আলোর বিকল্প উৎস (মোমবাতি) ব্যবহার করতে গিয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড একটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধ এবং ভূখণ্ডটিকে ইসরাইল ও মিসর চারদিক থেকে অবরোধ করে রাখাই এ পরিস্থিতির অন্যতম কারণ।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি গাজা। এখানে লোকসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে পাঁচ হাজার ৭০০। জাতিসংঘের ভাষ্য অনুযায়ী, ২৩ লাখ বাসিন্দার এ ভূখণ্ডটিতে থাকা আটটি শিবিরে প্রায় ছয় লাখ শরণার্থী বসবাস করে।