Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 12:45 am

ফুড লাইসেন্স করানোর উদ্যোগ ভালো

চালসহ সাতটি খাদ্যপণ্যের ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের ফুড লাইসেন্স করাতে উদ্যোগী হয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। গতকালের শেয়ার বিজে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, হিলিতে এজন্য মাইকিং ও প্রচারপত্র বিলি হয়েছে। খাদ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে, ফুড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করলে কী সমস্যা মোকাবিলা করতে হতে পারে। কী কী শর্ত পূরণ করে খাদ্যপণ্যের ব্যবসা করতে হবে, সেগুলোও প্রচার করা হচ্ছে। হিলিতে স্থলবন্দর রয়েছে এবং ছোট হলেও এটি আমাদের অন্যতম বিজনেস হাব। ওখানে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ফুড লাইসেন্স করাতে উদ্যোগী হয়ে ওঠার ঘটনা উৎসাহব্যঞ্জক। আমরা আশা করি, সারা দেশেই এ কার্যক্রম জোরদার করে তোলা হবে যেহেতু ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ফুড লাইসেন্স করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। আমরা জানি, চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার পর এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিতর্কের একপর্যায়ে খাদ্যমন্ত্রী ফুড লাইসেন্সের বিষয়টি সামনে আনেন। আমদানিকারকসহ সর্বস্তরের খাদ্যপণ্য ব্যবসায়ীদেরই এ লাইসেন্স করে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। যারা কোনো ধরনের লাইসেন্স ছাড়াই এতদিন ব্যবসাটি করে আসছিলেন, তারাও নিশ্চয়ই এর সুযোগ পাবেন।

চালের মতো কোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠলে সাধারণভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ ওঠে একশ্রেণির ব্যবসায়ী কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছেন বলে। দাম যে সবসময় অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে, তা অবশ্য নয়। তবে অস্বাভাবিকভাবেই বাড়লেই সেটা বড় খবর হয়। সম্প্রতি চালের দাম অব্যাহতভাবে বেড়ে ওঠার সময় একশ্রেণির চালকল মালিকের বিরুদ্ধে খোদ সরকারের ভেতর থেকে অভিযোগ ওঠে মজুতদারির। এদের কারও কারও গুদামে অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করা হয়। সরকার অবশ্য এ ধারায় বেশি দূর এগোয়নি। বড় চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অচিরেই বসেন সংশ্লিষ্ট তিন মন্ত্রী। সেখানে চালের দাম কমানো নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত হলেও বাজারে এর তেমন প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এর দাম পূর্বাবস্থায় আসবে বলেও কেউ আশা করে না। তবে কারসাজি কিছু হয়ে থাকলে তা বন্ধের দাবি এখনও জোরালো। যে প্রেক্ষাপটে ‘কারসাজি’ ঘটেছে বা ঘটতে পারে, সেটিও বিবেচ্য। সরকারের হাতে চালসহ জরুরি খাদ্যপণ্যের মজুত অনেক কমে এসেছিল কেন, তার সদুত্তর কিন্তু এখনও মেলেনি। আমরা আশা করব, ফুড লাইসেন্স করানোর তৎপরতার নিচে এটি ঢাকা পড়ে যাবে না। সংশ্লিষ্টদের এজন্য সরকার জবাবদিহির আওতায় আনবে বলেও আমরা আশাবাদী।

ফুড লাইসেন্স না করে বড় ব্যবসায়ীরা খাদ্যপণ্যের ব্যবসা করছেন বলে মনে হয় না। সরকার তাদের ওপরও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে বলে দাবি করা যাবে কি? চাল বাদে এমন কিছু খাদ্যপণ্য রয়েছে, যেগুলোয় দলবদ্ধ ব্যবসা বা ‘অলিগোপলি’ প্রতিষ্ঠা করা সহজ। সেক্ষেত্রে কিন্তু নজরদারি আরও বেশি করে প্রয়োজন। চালের বিশাল বাজারে বরং দলবদ্ধতা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন। তবে সংকটের সময় মজুতদারির প্রবণতা রোধে নজরদারি কিছুটা ভ‚মিকা রাখতে পারে বৈকি। সেক্ষেত্রে ফুড লাইসেন্স করানোর বিষয়টি সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। কিছু রাজস্বও বাড়বে এতে।