Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 1:50 am

ফুলছড়ি হাটে বিক্রি হয় কোটি টাকার মরিচ

 

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা: গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল এবং জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের কয়েকটি চর থেকে কৃষকরা মরিচ বিক্রি করতে নিয়ে আসেন এই হাটে। প্রতি হাটে কোটি টাকার ওপর মরিচ কেনাবেচা হয়। স্থানীয়ভাবে এ বাজারের নাম হয়েছে ফুলছড়ি মরিচের হাট।

উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের গলনাচরের কৃষক আব্দুল জব্বার (৪৩)  বলেন, বিঘা প্রতি কাঁচামরিচ উৎপাদনে ব্যয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। বিঘায় ৫০ মণের বেশি মরিচ উৎপন্ন হয়। ৫০ মণ কাঁচা মরিচ জমিতে লাল রং হয়ে পাকার পর তা রোদে শুকিয়ে ১০ হাজার টাকার মতো আয় হয় তার। মরিচ বিক্রেতা ফুলছড়ি গ্রামের ফজলু মিয়া (৫০) বলেন, চরে মরিচ চাষ করে এই হাটে বিক্রি করতে আসি। শুধু আমি না এই হাটে মরিচ বিক্রি করতে আসেন আমার মতো প্রায় হাজার খানেক কৃষক। গাইবান্ধার লাল মরিচ বা শুকনো মরিচের কদর রয়েছে দেশব্যাপী। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীবেষ্টিত জেলার চার উপজেলার চর-দ্বীপচরের শত শত বিঘা জমিতে মরিচের ব্যাপক ফল হয়ে থাকে। সাধারণত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরই চরের পলি মাটিতে বীজ ছিটিয়ে দুই-তিনবার নিড়ানি দিলেই বিনা সারে বিস্তর ফলন হয় মরিচের।

এ কারণে বগুড়া, নওগাঁ, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা ফুলছড়ি হাটে মরিচ কিনতে আসেন। তাছাড়া ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী নামি দামি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এই হাট থেকে মরিচ সংগ্রহ করেন। এবার প্রতি মণ মরিচ ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হাটে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার মণ শুকনো মরিচ বিক্রি হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় যে পরিমাণ মরিচের চাষ হয় তার অর্ধেকই উৎপন্ন হয় ফুলছড়ি উপজেলায়। আবহাওয়া ও চরের উর্বর মাটিতে দিন দিন মরিচ চাষের পরিমাণ বাড়ছে। চরের লোকজনও মরিচ চাষে ঝুঁকছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।