ফুল দেওয়াতে সীমাবদ্ধ কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম

শেয়ার বিজ ডেস্ক : বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নায্য দাবি আদায় ও যেকোনো ইস্যুতে শিক্ষকদের শক্ত অবস্থানের জন্য সংগঠন ‘শিক্ষক সমিতি’। ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন জরুরি এবং জাতীয় ইস্যুতে সরব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। এমনকি বর্তমান সময়েও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ ইস্যুর পাশাপাশি জাতীয় ও অন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে সরব হতে দেখা যায়। এর পুরোপুরি ব্যাতিক্রম স্থবির এক সংগঠনে পরিনত হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।

সম্প্রতি, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার বিপরিতে মত প্রকাশ করেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ইস্যুতেও নিরব ভূমিকায় সংগঠনটি। ছাত্র সংগঠন গুলোর সংঘাত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের উপর ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের হামলার ঘটনায় সব মহলে নিন্দার ঝড় উঠলেও শিক্ষক সমিতির নিরবতার প্রেক্ষাপটে আবারো আলোচনায় এসেছে শিক্ষক সমিতির কার্যক্রমের স্থবিরতার বিষয়টি।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন হওয়া শিক্ষক সমিতির বর্তমান কমিটি (রিয়াদ- জান্নাত) মেয়াদ পূর্ণ করায় ইতিমধ্যে নতুন নির্বাচনের ঘোসনা এসেছে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গত কয়েক বছরে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্বাধীনতা দিবস – বিজয় দিবসের মত বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ফুল দেওয়া, বাৎসরিক পিকনিক আর বছর শেষে নতুন নির্বাচন আয়োজন ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো কার্যক্রম নেই শিক্ষক সমিতির। তার উপরে রয়েছে উপাচার্যকে তুষ্ট করার প্রতিযোগীতার অভিযোগ।

জাতীয় ইস্যু তো নয়-ই,শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে  বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন গুরুত্বপূর্ণ  বিষয়, এমনকি শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়েও নীরব থাকার অভিযোগ আছে শিক্ষকদের মধ্যে থেকেই।

এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে শিক্ষক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ড.জান্নাতুল ফেরদৌস শিক্ষকদের জন্য লাউঞ্জে,শিক্ষকদের ইনক্রিমেন্ট সুবিধা আদায় সহ তাদের দেওয়া আটটি টি ইশতেহারের মধ্যে অধিকাংশ ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন বলে জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নীরবতা বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. রিয়াদ হাসান বলেন, ” আমরা বিষয়গুলোতে কনসার্ন এবং প্রশানের সাথে কথা বলেছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় দ্রুত সুষ্ট ও ন্যায় বিচার করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী ড়. তুষার কান্তি সাহা বলেন, আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এসব বিষয়ে সক্রিয় হওয়ার উচিত।  আমি নেতৃত্বে আসলে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে যথোপযুক্ত অবস্থান নেব।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সুজন আলী (শেখ সুজন আলী) বলেন, শিক্ষক সমিতির নিস্ক্রিয়তা খুবই ক্ষতিকর। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে শিক্ষক নেতাদের কথা বলা উচিত।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আলোচনা- সমালোচনা থেকেই ভালো কিছু বের হয়ে আসবে।
শিক্ষক সমিতি গঠনের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,  শিক্ষক সমিতি গঠনের অন্যতম উদ্দেশ্যই হচ্ছে শিক্ষকদের যুক্তিসংগত অধিকার আদায় এবং পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশ, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবদান রাখা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০