নাজমুল ইসলাম ফারুক: গ্যাস সংকটে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফু-ওয়াং সিরামিকের টার্নওভার কমেছে। পাশাপাশি ধস নেমেছে মুনাফায়ও। ফলে কোম্পানিটির ভিত্তি দিন দিন দুর্বল হচ্ছে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা।
ফু-ওয়াংয়ের আর্থিক বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এ সময়ে কর-পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির টার্নওভারের পরিমাণ ছিল ৪২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, মুনাফার পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং ইপিএস ছিল ৩৩ পয়সা।
এর আগে গত ২০১৬ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ ছিল ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং ইপিএস ছিল ১ টাকা ২৯ পয়সা। আলোচিত সময়ে কোম্পানির জমি বিক্রি বাবদ আয় হয়েছিল ৫ কোটি ১৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং ইপিএস ছিল ৩৪ পয়সা। জমি বিক্রি বাবদ আয়ের কারণে আগের বছরের চেয়ে গত সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির মুনাফা বেড়েছিল।
কোম্পানির সার্বিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে ফু-ওয়াং সিরামিকের কোম্পানি সচিব আহমেদ মুনাব্বি শেয়ার বিজকে বলেন, ‘গ্যাসের সমস্যার কারণে কোম্পানির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে টার্নওভারে। ফলে কোম্পানির মুনাফা আগের চেয়ে কমেছে।
তবে গ্যাস সমস্যা সমাধানে এলপিজির মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো যায় কি না—তা খতিয়ে দেখছে কোম্পানির পর্ষদ। এটির সমাধান হলে কোম্পানির উৎপাদন বাড়বে। এতে কোম্পানিটি আগের মতো উৎপাদনসক্ষমতা ফিরে পাবে।’ এতে আগামীতে মুনাফার পরিমাণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে পুঁজিবাজারে ফু-ওয়াংয়ের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত দুই বছরে কোম্পানির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১০ টাকা ৩০ পয়সায় এবং সর্বোচ্চ ২১ টাকা ৫০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত এক মাসে কোম্পানির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১৮ টাকা ৭০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ২১ টাকা ৩০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে।
লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোম্পানিটি ২০০৯ সাল থেকে গত সমাপ্ত হিসাববছর পর্যন্ত প্রতিবারই ১০ শতাংশ হারে বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে।
কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১১২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। কিছুদিন আগে কোম্পানির অনুমোদিন মূলধন বাড়িয়ে ৫০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯০ টাকায় বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগকারীরা সম্মতি দিয়েছে।
কোম্পানিটির মোট ১১ কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৮৬টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ১৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ৩৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ৪৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার।