ফেনীতে তীব্র যানজটে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে

শাহাদাত হোসেন তৌহিদ, ফেনী: ফেনী শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যানজট পরিস্থিতি দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। এতে শহরের অধিবাসীদের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যত্রতত্র পার্কিং ও ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণে এ ধরনের যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তা অস্বীকার করে ট্রাফিক পুলিশ সম্মিলিতভাবে যানজট মোকাবিলায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের ট্রাংক রোড, ব্যস্ততম মহিপাল এলাকা, এসএসকে সড়ক, ফেনী-মোহাম্মদ আলী সড়ক, ফেনী-সোনাগাজীসহ শহরের অধিকাংশ সড়কেই প্রায় প্রতিদিনই যানজট লাগছে। এতে যানবাহনগুলো দীর্ঘ সময় ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে থাকতে হচ্ছে। ফলে স্থানীয়দের ভোগান্তি যেমন বেড়েছে, তেমনি নষ্ট হচ্ছে তাদের মূল্যবান সময়।
স্থানীয়রা এ যানজটের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং, যত্রতত্র সিএনজি স্ট্যান্ড, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে। এসব কারণে প্রসস্ত রাস্তাগুলোও দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। এছাড়াও শহরে পুরাতন ও নতুন মার্কেটগুলোতে কোনো পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না রাখার কারণে রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। শহরের ফুটপাতও এখন হকারদের দখলে। ফলে যানজট বাড়ছে। যানজটের কারণে জেলার সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাতায়াত করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে পরীক্ষার হল ও স্কুল কলেজে পৌঁছাতে পারছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের প্রধান সড়কের বেশ কয়েকটি জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড। ট্রাংক রোডের খেজুর চত্বর থেকে শান্তি কোম্পানি রোড পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সিএনজি, ইমা ও বাসস্ট্যান্ড চালু রয়েছে। এসব অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ডগুলোর গন্তব্য মোহাম্মদ আলী বাজার, শর্শদি ও নতুন বাজার। আবার খেজুর চত্বর থেকে গুদাম কোয়ার্টার পর্যন্ত সিএনজি স্ট্যান্ডের গাড়িগুলোর গন্তব্য সদর হাসপাতাল, জিএমহাট, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম। এসব সিএনজি বেআইনিভাবে ব্যস্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করেন।
এছাড়া শহরের খেজুর চত্বর থেকে দাউদপুর ব্রিজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সিএনজি, ইমা ও বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। সিএনজি স্ট্যান্ডগুলোর গাড়ির গন্তব্য তুলাবাড়ীয়া, লালপোল, কাতালিয়া, মধুপুর, কালিদহ, লস্করহাট, কুটিরহাট, সোনাগাজী, ডাকবাংলা। এর বাইরে জেল রোড থেকে কলেজ রোড পর্যন্ত
রাস্তায় প্রতিদিনই অসংখ্য প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকে। এতে রাস্তা সঙ্কুচিত হয়ে যানজট বাড়ছে।
কয়েকজন যাত্রী বলেন, এসব সিএনজি স্ট্যান্ডগুলো শহরের ব্যস্ততম সড়ক থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করলে শহরের যানজট অনেকটা কমে যাবে। এ ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ারও আহ্বান জানান তারা।
এ বিষয়ে ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র স্বপন মিয়াজী শেয়ার বিজকে জানান, সিএনজি স্ট্যান্ডগুলোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে শহরের ব্যস্ততম সড়কে সিএনজি স্ট্যান্ড রাখার কোনো নিয়ম নেই। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।
আর ফেনীর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ফারুক জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে যানজট রয়েছে সত্য। তবে ট্রাফিক পুলিশ সম্মিলিতভাবে এ যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ কছে বলে দাবি করেন তিনি।