প্রতিনিধি, ফেনী: ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নে তিন বছরের ভাতিজা তরিকুল ইসলাম হত্যার দায়ে চাচী আরজিনা আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বুধবার ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) এ রায় ঘোষণা করে আদালত। আসামি আরজিনা আক্তার ২০১৯ সালে ২৩ নভেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কামাল উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামে বাড়ির পাশে জমির আইল থেকে শিশু তরিকুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। শিশুটি দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের মাওলানা আবু বকরের একমাত্র ছেলে।
এ ঘটনার পরের দিন পরশুরাম মডেল থানায় তরিকুলের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামির নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৩ নভেম্বর দুপুরে সন্দেহভাজন হিসেবে চাচী আরজিনা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পরশুরাম মডেল থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান।
একই বছরের ২৪ নভেম্বর বিকেলে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তানিয়া ইসলামের আদালতে আরজিনা আক্তারকে (৩৫) হাজির করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওসি ছাগলনাইয়া থানায় বদলি হলে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই রিয়াউল জব্বারকে। ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আরজিনাকে অভিযুক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিয়াউল জব্বার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর চার্জগঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন। ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি এ মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা এ মামলায় ২৫ জনকে সাক্ষী করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি হাফেজ আহমেদ জানান, জেলা ও দায়রা জজ ড. জেবুননেছার আদালতে বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এর আগে গত ১৪ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিয়াউল জব্বার ও পুলিশ কনস্টেবল রঞ্জন চাকমার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব সমাপ্ত করেন আদালত। এ মামলার ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও বাদীসহ ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হাফেজ আহমেদ সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস ছাত্তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।