Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 2:57 pm

ফেনীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জয়নাল হাজারী

প্রতিনিধি, ফেনী: জন্মস্থান ফেনীতে লাখো ভক্ত-অনুসারীদের অশ্রুসিক্ত বিদায়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, ফেনী-২ আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন হাজারী।

নিজের জীবনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ফেনীর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জানাযার নামাজ শেষে পৈত্রিক নিবাস মাষ্টার পাড়ার শৈল কুটির প্রাঙ্গণের মুজিব উদ্যানে তাকে সমায়িত করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রথম জানাযা শেষে জয়নাল হাজারীর মরদেহ দুপুর আড়াইটায় ফেনীতে পৌঁছাতেই শহরজুড়ে নেতাকর্মীদের ঢল নামে।

জানাযায় অংশ নিয়ে এই নেতাকে শেষ বারের মতো এক পলক দেখতে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফেনী শহরে ছুটে আসতে থাকেন রাজনৈতিক-সামাজিক দলসমূহের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষ।

জনস্রোত সামাল দিতে এবং নির্বিঘ্নে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন করতে বিকেল সাড়ে তিনটা থেকেই জানাযাস্থলের আশপাশের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল সাময়িক বন্ধ করে শহরজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ প্রশাসন।

এর আগে গত সোমবার বিকেল ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৬ বছর বয়সে জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই রাজনীতিক।

জয়নাল হাজারী ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা ২০ বছর ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও ফেনী-২ আসন থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০১ সালের ১৭ আগস্ট বাধ্য হয়ে দেশ ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যান জয়নাল হাজারী।

সংসদ সদস্য হিসেবে তার শেষ মেয়াদে নানা বিতর্কে জড়ানোর কারণে ২০০৪ সালে দল থেকে বহিষ্কৃত হন। এরপর দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আবারও দেশে ফিরেন তিনি। পাঁচটি মামলায় ৬০ বছরের সাজা হয় তার।

এরপর ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করলে আট সপ্তাহের জামিন পান হাজারী। পরে ১৫ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে। চার মাস কারাভোগের পরে ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে দলের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য হিসেবে জয়নাল হাজারীকে মনোনীত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সেই পদে থেকেই নিজের জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ।