Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 5:34 pm

ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি বাড়ে ২০.৬%

শেয়ার বিজ ডেস্ক:চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি বাড়ে ২০ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কারণে এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় এবার আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। এ সময় চিপ, গাড়ি ও অন্যান্য মূল উপাদানের সরবরাহ বেড়েছে। খবর: দি কোরিয়া টাইমস।

এর আগের বছর এ সময় কভিড-১৯ মহামারির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়। চিপ সরবরাহে ছেদ পড়ে। সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন ব্যাহত হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য, শিল্প ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংকলিত তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে ৫ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর আগের বছরে যা ছিল ৪ হাজার ৪৭১ কোটি ডলার।

১৯৫৬ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথ্য সংকলন করে আসছে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত রপ্তানি খাতে এটিই কোরিয়ার সর্বোচ্চ আয় বলে জানায় মন্ত্রণালয়। দেশটির ইতিহাসে গত মাসেই প্রথমবারের মতো রপ্তানি আয় ৫ হাজার ডলার ছাড়ায়। এর আগে এর কাছাকাছি আয় আসে ২০১২ সালেÑ৪ হাজার ৬৩ কোটি ডলার।

গত মাসে আমদানিতেও রেকর্ড করেছে কোরিয়া। বৈশ্বিক জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশটির ইতিহাসে যেকোনো বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় বেশি আমদানি করতে বাধ্য হয় দেশটি। গত মাসে দুবাইয়ের অপরিশোধিত তেল ও দক্ষিণ কোরিয়ার বেঞ্চমার্কের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯৪ ডলার ১০ সেন্ট ছাড়িয়ে যায়। গত বছর যা ৬০ ডলার ৮৯ সেন্ট ছিল। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ে তেলের দাম। জ্বালানি শক্তির চাহিদা মেটাতে আমদানির ওপর নির্ভরশীল কোরিয়া।

আমদানি বৃদ্ধি সত্ত্বেও ফেব্রুয়ারিতে ৮৪ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত করতে সক্ষম হয়েছে দেশটি। যদিও এর আগের দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতিতে ছিল দেশটি।

কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, কভিড-১৯-এর ধরন ওমিক্রনের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায়, কাঁচামালের উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি ও ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনার কারণে গত মাসে দেশে ও বিদেশে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায় দেশ। কিন্তু আমদানির বিপরীতে রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ভারসাম্য রক্ষা করতে সচেষ্ট হয়। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, টানা ১৬ মাস ধরে রপ্তানি বাড়ছে এবং ১২ মাস ধরে প্রবৃদ্ধি দুই সংখ্যার ওপর রয়েছে।

কোরিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে চিপ ও গাড়ি। ফেব্রুয়ারিতেও এসব পণ্যের চালান বেড়েছে। এ সময় চিপের রপ্তানি ২৪ শতাংশ বেড়ে হয় ১ হাজার ৩৮ কোটি ডলার। গাড়ি রপ্তানি বাড়ে ৯ দশমিক ১ শতাংশ (৩৮০ কোটি ৪০ লাখ ডলার)। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে পেট্রোকেমিক্যালসের রপ্তানি বাড়ে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ (৪৮০ কোটি ডলার)। পেট্রোলিয়াম পণ্যের বেলায় যা ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ (৪০০ কোটি ডলার)। ইস্পাত খাতের রপ্তানি বাড়ে ৪০ দশমিক ১ শতাংশ (৩৩০ কোটি ডলার)। জৈব-স্বাস্থ্য খাতে রপ্তানি বাড়ে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

তবে এ সময় গাড়ি রপ্তানি কমে ১ দশমিক ১ শতাংশ (১৮০ কোটি ডলার)। বিদেশের কারখানাগুলোয় গাড়ি উৎপাদন কমে

আসায় ও চিপের সরবরাহ সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ায় গাড়িও উৎপাদন কমে আসে, যা রপ্তানি কমিয়ে দেয়।

দেশভিত্তিক হিসেবে চীনে রপ্তানি বাড়ে ১৬ শতাংশ (এক হাজার ৩০০ কোটি ডলার), যুক্তরাষ্ট্রে যা ছিল ২০ দশমিক ৯ শতাংশ (৭৭০ কোটি ডলার)। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোয় ৩৮ দশমিক ৪ শতাংশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ রপ্তানি বাড়ে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোয় ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ ও রাশিয়ায় ৭৩ শতাংশ বাড়ে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুন সুং-উক বলেন, ইউক্রেন ইস্যুসহ অন্য বৈশ্বিক সমস্যার কারণে রপ্তানিতে পতন ঠেকাতে সরকার রপ্তানিকারকদের পক্ষে নানা নীতি আরোপ করছে যাতে জুনের মধ্যে রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত থাকে এবং প্রবৃদ্ধি বাড়ে।