নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছেন প্রবাসীরা। সদ্যসমাপ্ত ফেব্রুয়ারিতে তারা ১৭৮ কোটি মার্কিন ডলার (এক দশমিক ৭৮ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ১৫ হাজার ১৩৮ কোটি টাকার বেশি।
গতকাল সোমবার রেমিট্যান্সের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে আসা রেমিট্যান্স আগের বছর একই সময়ের চেয়ে ১৮ শতাংশ বা ৩২ কোটি ৮৪ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৫ কোটি ডলার।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নগদ প্রণোদনা ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। এছাড়া মহামারিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কারণে প্রবাসীরা জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। মজবুত হচ্ছে অর্থনীতির ভিত। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৬৬৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা)। রেমিট্যান্সের প্রবাহ চাঙা থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সবশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৪ দশমিক ০২ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪০২ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। ১৩৪ কোটি ৬৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ লাখ মার্কিন ডলার। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে একটিতে এসেছে তিন কোটি ডলার।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর আগের মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ২০৫ কোটি ডলার।
সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। আরও আগে অর্থাৎ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই সময় রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক তিন শতাংশ বেশি।
