ফের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্দিষ্ট পরিমাণ ডাউন পেমেন্টে ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধের সুবিধা দেয়ার বিষয় বিবেচনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চলতি বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা দেয়া হতে পারে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না আসলেও এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিবেচনা করে করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

গতকাল অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক ও সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, একাধিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ দুই বছর ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুবিধা পেয়েছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি তারাও এই সুবিধা নিয়েছেন। অনেক ভালো প্রতিষ্ঠান এ সময়ে ঋণ পরিশোধের সুযোগ থাকলেও তারা ঋণ পরিশোধ করেনি। এখন ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোপুরি সচল তাই নতুন করে সুবিধা দিলে ব্যাংকগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হবে। হতাশ হবেন ভালো গ্রাহক। তাই এই সুবিধার বিরোধিতা করেছেন এমডিরা।

অন্যদিকে কিছু ব্যাংকের এমডি যুক্তি উপস্থাপন করে নতুন করে ঋণ সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেন। কারণ এখনও পুরোপুরি করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠেনি আর্থিক খাত। এ ছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে সব ধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং পণ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। তাই নতুন করে যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ ডাউন পেমেন্টে জমা নিয়ে চলতি বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত মরাটোরিয়াম সুবিধা দেয়া হোক।

নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, অর্থঋণ আদালতে ঝুলে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয় সে বিষয়ে জোর দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ অভিজ্ঞ আইনজীবীর অভাবে অনেক সময় মামলাগুলো দীর্ঘায়িত হয়ে পড়ে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংকের ঋণ আদায় কার্যক্রম। মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেইন বলেন, যেহেতু গভর্নর ফজলে কবিরের এটাই শেষ মিটিং তাই বিগত সময়গুলোয় ঘটে যাওয়া ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকে অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ ও এফবিসিসিআইয়ের আবেদন ছিল অন্যতম। এসব বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। এজন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি আরও জানান, ব্যাংকারদের জন্য একটি বিশেষ হাসাপাতাল নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেমন পুলিশ বাহিনী ও সামরিক বাহিনীর জন্য রয়েছে। তাদের মতো ব্যাংকার ও তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ হাসপাতাল থাকলে করোনার মতো গুরুতর সময়গুলোয় ভোগান্তি কম হবে। ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চ সুদহার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০