নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংক সাড়ে চার মাসের মাথায় ফের ন্যাশনাল ব্যাংকের (এনবিএল) পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংকের বিদ্যমান পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদও গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশে ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দিয়েছিল সংস্থাটি।
গতকাল রোববার ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিতকল্পে ও জনস্বার্থে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১’-এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠন করা হলো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ব্যাংকটির দায়িত্ব নেয়ার জন্য পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়ছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক যে পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল তাদের মধ্যে কয়েকজন পদত্যাগ করেছেন। তাই নতুন করে পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। এখন থেকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব পালন করবে।
ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন উদ্যোক্তা পরিচালক এবং কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান।
বোর্ডের অন্য নতুন সদস্যরা হলেনÑন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রতিনিধি পরিচালকের মধ্যে রয়েছেন লে.জে. মো. সফিকুর রহমান (অব.), প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম (এফসিএমএ), ব্যবসায়ী এরশাদ মাহমুদ, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এহসানুল করিম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর একেএম তফাজ্জল হক। স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, ড. রত্না দত্ত (এফসিএ) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবিএম জহুরুল হুদা। আগের পর্ষদের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন ছাড়া নতুন পর্ষদে আর কাউকে রাখা হয়নি।
আর্থিক নানা অনিয়মের কারণে সংকটে পড়া সিকদার গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ সাড়ে চার মাস আগে ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময় ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে মনোয়ারা সিকদার, রন হক সিকদার, রিক হক সিকদার, নাইমুজ্জামান ভূঁইয়া ও মুরশিদ কুলি খানকে বাদ দেয়া হয়। কেবল সিকদার গ্রুপ থেকে পারভীন হক সিকদারকে পরিচালক হিসেবে রাখা হয়। তবে গতকাল নতুন পর্ষদ থেকে তাকেও বাদ দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ সিকদার গ্রুপের বাইরে চলে গেছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ন্যাশনাল ব্যাংককে (এনবিএল) ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবির সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এখনই কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চাচ্ছে না ন্যাশনাল ব্যাংক। গত ২৭ এপ্রিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়। এমন সিদ্ধান্তের মধ্যেই ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করল বাংলাদেশ ব্যাংক।