নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে শূন্যরেখার কাছাকাছি বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ১২০ মিটার ভেতরে দুটি গোলা এসে পড়েছে। গতকাল শনিবার সকালে জনবসতিহীন পাহাড়ে এ দুটি গোলা বিস্ফোরিত হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে বান্দরবানের পুলিশ সুপারের (এসপি) দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট দুটি মর্টারের গোলা নাইক্ষ্যংছড়ির উত্তর ঘুমধুমপাড়ার জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এসে পড়েছিল। তবে গোলা দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলী সীমান্তের লোকজন জানিয়েছেন, গতকাল সকাল থেকে ৪০ ও ৪১ নম্বর সীমান্ত পিলারের ওপারে (মিয়ানমার ভূখণ্ডে) ওয়ালিডং পাহাড় থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি যুদ্ধ হেলিকপ্টার ওয়ালিডং পাহাড়ি এলাকায় বোমা ফেলে। বান্দরবানের পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ (গতকাল) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ৪০ ও ৪১ নম্বর সীমান্ত পিলারের মাঝামাঝি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান থেকে আট থেকে ১০টি গোলা এবং দুটি হেলিকপ্টার থেকে ৩০ থেকে ৩৫ রাউন্ড গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। তাদের ছোড়া দুটি গোলা ৪০ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছাকাছি শূন্যরেখার প্রায় ১২০ মিটার ভেতরে বাংলাদেশ অংশে এসে পড়েছে। এ ছাড়া ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৪ ও ৩৫ সীমান্ত পিলারের তুমব্রু এলাকা থেকে মিয়ানমার ভূখণ্ডে ভারী অস্ত্রের গোলাগুলি এখনও শোনা যাচ্ছে। সেখানে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের (বিজিপি) তুমব্রু রাইট ক্যাম্প অবস্থিত। মূলত বিজিপির ওই ক্যাম্পের আশপাশে গোলাগুলি চলছে। মুরিঙ্গাঝিরি বিজিপি সীমান্তচৌকি থেকেও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় গতকাল মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবান সীমান্তবর্তী এলাকায় পড়ার খবরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘আমরা অবজার্ভ করছি।’ তিনি বলেন, মিয়ানমারের ওখানে কিছু ভায়োলেন্স হচ্ছে। আমরা আমাদের বর্ডার সিল করেছি। মিয়ানমার যত উসকানিই দিক না কেন সীমান্ত দিয়ে সেদেশ থেকে আর কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না। মিয়ানমারের লোক আমাদের দিকে যাতে না আসতে পারে, সেজন্য বিজিবিকে সতর্ক করেছি। পাশাপাশি মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও নিয়মিত আলাপ করছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না। আমরা অবজার্ভ করছি। এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানান, মিয়ানমারের গোলা আবার বাংলাদেশে এসে পড়ার ঘটনায় আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হবে।