Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 12:34 pm

ফের রামেকে ইন্টার্ন চিকিৎসদের ৭২ ঘন্টার কর্মবিরতি

প্রতিনিধি, রাজশাহী : গত বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়াররের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপর হামলা ও ভাঙচুর চালায় রাবি শিক্ষার্থীরা। পরে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ তিন দফা দাবিতে তাৎক্ষণিক কর্মবিরতি শুরু করে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। কর্মবিরতি সেসময় শেষ হলেও ফের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা ৭২ ঘন্টার কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে।

শনিবার দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ৭২ ঘন্টার (৩দিন) কর্মবিরতির ডাক দেয়া হয়। এর পর আর কোন ইন্টার্ন চিকিৎসক কাজে জাননি।

কয়েকটি দাবিতে তারা কর্মবিরতি দিয়েছে। দাবিগুলো হলো, রাবি ছাত্র শাহরিয়ারের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন এবং হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করেন ইন্টার্ন পরিষদের সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মামলা রেকর্ড করে তিনদিনের মধ্যে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচী দেয়ার হুশিয়ারি দেন ডা. ইমরান।

ইন্টার্ন পরিষদের আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও বিএমএর সাধারণ সম্পাদক নওশের আলী, হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম ইয়াজদানী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. খলিলুর রহমান।

আগামী ২৬ অক্টোবর হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের জরুরী সভার আহবানের ঘোষণা দিয়ে সমাবেশে সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ওই সময় সেদিনের ঘটনা পর্যালচনা করা হবে। এর পর পরবর্তি করনীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়ের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাংসদ বাদশা। তিনি রাবি ছাত্রের মৃত্যুর কারণ উৎঘাটন এবং হাসপাতালে হামলাকারী তারা কারা তাদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশের প্রতি আহবান জানান।

ইন্টার্নি পরিষদের আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও বিএমএর সাধারণ সম্পাদক নওশের আলী, হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম ইয়াজদানী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. খলিলুর রহমান।

গত বুধবার রাত আটটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ার হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান। এরপর দ্রুত তাকে অ্যাম্বুলেন্সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে ৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর পর চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রাবির শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা রাবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে রাত ১২টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সবাই একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত গঠন করে কমিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও রাবির তিন শতাধিক ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করে তারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের রাজপাড়া থানায় হাসপাতালের পক্ষে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে অভিযোগ দেন।

এর পর বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতাল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শেষে শুক্রবার সকাল থেকে কাজে ফেরার ঘোষণা দেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন। এ সময় হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন তিনি। শুক্রবার সকাল থেকে কাজে যোগ দেন ইন্টার্নরা। তবে মামলা রেকর্ড না হওয়া এবং কাউকে গ্রেপ্তার না করায় নতুন করে তিনদিনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হল।