নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিএমপির যাত্রাবাড়ী ও নিউমার্কেট থানার পৃথক চারটি মামলায় সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে ২৪ দিন এবং সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে ১৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
এছাড়া শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
হত্যা মামলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননেরও সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানি নিয়ে তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম শাহীন রেজা।
গতকাল সকালে আাসামিদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আনা হলে তাদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। এই পাঁচজনের প্রত্যেকের রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে ইমন হোসেন গাজী নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় দীপু মনি, পলক, ইনু ও রাশেদ খান মেননকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মাহাবুল ইসলাম। শুনানি শেষে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকার চিটাগাং রোডের ওপর আন্দোলন চলাকালে ইমন হোসেন গাজী নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহত ইমনের ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২৮ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় ৮৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থী সাকিব হাসান হত্যার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার আরেক মামলায় দীপু মনি ও পলকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মোজাহিদুল ইসলাম। শুনানি শেষে দীপু মনি ও পলকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
এই মামলার বিবরণে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই বিকাল ৫টায় যাত্রাবাড়ীর কাজলা বিশ্ব রোডে আন্দোলনকারীদের ওপরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে গুলি ছোড়ে। ওই সময় গুলিতে সাকিব মারা যান।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কিশোর মাহমুদুল হাসান জয় হত্যার যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় দীপু মনি, পলক ও সালমান এফ রহমানকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মাহাবুল ইসলাম। শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট ঢাকার শনির আখড়া ব্রিজের কাছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের মিছিলে পুলিশ ও সরকারি সমর্থক সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়। ওইদিন ১৪ বছর বয়সী কিশোর মাহমুদুল হাসান জয় গুলিতে আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন জয় মারা যান।
এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মো. কাদের (জিএম কাদের), হামীম গ্রুপের উপদেষ্টা এ কে আজাদসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৭ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। আন্দোলনে মাজেদুল ইসলাম হত্যাচেষ্টার নিউমার্কেট থানার মামলায় জুনায়েদ আহমেদ পলককে সাত দিনের রিমান্ডে পেতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার এসআই মো. সবুজ মিয়া। শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
