নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকল বিএনপি। দলের ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
এরপর দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি শেষে আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ঢাকাসহ সারাদেশের জেলা সদরে মানববন্ধনের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।
গুম-খুন ও গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা এই কর্মসূচি যোগ দেবেন।
গতকাল সোমবার নবম দফায় ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিন বিকালে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এ নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি ১২ বার কর্মসূচি ঘোষণা করল। এর মধ্যে দুবার ডাকা হয়েছে হরতাল আর ১০ বার ডাকা হয়েছে অবরোধ।
সেদিন নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেলে পরদিন ডাকা হয় হরতাল। এরপর বিএনপির অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ নেতা গ্রেপ্তার হন, বাকিরা চলে যান আত্মগোপনে।
সেই কর্মসূচি পালন করে এক দিনের বিরতি দিয়ে টানা ৭২ ঘণ্টা অবরোধ ডাকা হয়। এর পর থেকেই ভার্চুয়াল ব্রিফিং করে দফায় দফায় হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচি দিয়ে আসছেন রিজভী। এ পর্যন্ত ১৮ দিন অবরোধ এবং চার দিন হরতাল করেছে বিএনপি।
এই কর্মসূচিতে নভেম্বরের শুরু থেকে প্রতি মঙ্গলবার বিরতি রাখছে বিএনপি। এছাড়া সরকারি ছুটির দিনও কর্মসূচি থাকে না।
টানা কর্মসূচি ডেকে এলেও এর সমর্থনে ঢাকা বা দেশের অন্য কোথাও রাজপথে দলের নেতা-কর্মীদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে তারা ঝটিকা মিছিল করে মুহূর্তেই এলাকা ছেড়ে যায়।
সড়কে গাড়ির চাপও বাড়ছে। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে সিগন্যালে গাড়ির সারিও এখন চোখে পড়ে, পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় হরতাল ও অবরোধে যানজটও দেখা যায়।
তবে আগামী ৭ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি কর্মসূচি থামাচ্ছে না। এটি চলমান থাকবে বলেই ঘোষণা এসেছে।
এর মধ্যে ভোটের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। প্রার্থী হতে জমা পড়েছে পৌনে তিন হাজার মনোনয়নপত্র। সেগুলো এখন যাচাই-বাছাই চলছে।
৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এই প্রক্রিয়া শেষে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ রাখা হচ্ছে। এর পরদিন প্রতীক বরাদ্দ হলে প্রচারে নামতে পারবেন প্রার্থীরা।
বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মধ্যে ২৯ দল ভোটে এসেছে। এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অন্তত চারটি দলের ভোট বর্জনের ঘোষণা ছিল।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ১৮ নেতা ভোটে আসায় তাদের বহিষ্কার করেছে দলটি। তাদের মধ্যে অন্তত দুজন আছেন নির্বাহী কমিটির সদস্য। দলের এক ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীক পেতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।