ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি করেছে ট্রাম্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান!

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছিল ব্রিটেনভিত্তিক ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে পাঁচ কোটিরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে তা ট্রাম্পের প্রচারে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক।

গত শনিবার নিউইয়র্ক টাইমস ও লন্ডনস অবজারভারের প্রতিবেদনে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগ উঠে আসে।  প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী, সহযোগী ও বিভিন্ন নথির বরাতে পত্রিকা দুটি এ অভিযোগ করেছে, যাকে ফেসবুকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ‘তথ্য চুরির’ ঘটনা হিসেবেও দেখছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের দফতর তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে। ব্রিটেনের তথ্য কমিশনও ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে বলে শনিবার জানিয়েছে। তথ্য কমিশনার এলিজাবেথ ডেনহাম বলেন, ‘তদন্তে ফৌজদারি বা দেওয়ানি কোনো ধরনের লঙ্ঘন ধরা পড়লে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এক বিবৃতিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তথ্যের গোপনীয়তা নীতি লঙ্ঘনের কারণে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এ খবর প্রকাশের পর শনিবার মার্কিন কংগ্রেস থেকে ডাক পায় ফেসবুক। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যমটিকে।

২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ও পরে ফেসবুকের বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে মার্কিন ভোটারদের রাশিয়া প্রভাবিত করেছিল বলে ইতোমধ্যে অভিযোগ রয়েছে। আবার নতুন এ খবরের পর শুরু হওয়া নজরদারি প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদার জন্য বাড়তি হুমকি যোগ করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ কোটিরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য  অন্যায়ভাবে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে গেছে। ২০১৫ সালের শুরুতে এই ডেটা মুছে দিতে ফেসবুকের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও তা মুছে দেওয়া হয়নি।

এদিকে ট্রাম্পের এক প্রচার কর্মকর্তা বলেন, ভোটার তথ্যের জন্য তারা রিপাবলিকা ডেটা উৎসগুলো ব্যবহার করেছেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ডেটা নয়।

এ ফেসবুক বলছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার গবেষকরা তাদের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন। এ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলে সামাজিক মাধ্যমটি।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬’র জুনে নির্বাচনী প্রচারে যুক্ত হওয়া ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার পেছনে রিপাবলিকান শিবির ছয় কোটি ডলারের বেশি খরচ করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিপাবলিকান প্রচার শিবিরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অন্য কারও কাছ থেকে ভোটার তথ্য নিয়ে ২০১৬ সালে বিজয়ী হয়েছিলামÑএ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের রিপাবলিকান প্রার্থীর ডিজিটাল বিজ্ঞাপন অপারেশন্স দেখভালকারী কর্মকর্তা ব্র্যাড পার্সকেল এর আগে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১৬’র নির্বাচনী প্রচারে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার ভূমিকা ‘গৌণ’ ছিল বলে দাবি করেছিলেন।

এদিকে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার এক মুখপাত্র জানান, গ্লোবাল সায়েন্স রিসার্চ (জিএসআর) নামের একটি সংস্থা তাদের তথ্য দিতে চুক্তিবদ্ধ ছিল, যা ব্যবহারকারীদের অনুমতিসাপেক্ষে নেওয়া এবং ব্রিটেনের তথ্য সংরক্ষণ আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা স্পষ্ট হলাম ফেসবুকের নিয়ম মেনে জিএসআর ওই তথ্য সংগ্রহ করেনি, সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাছ থেকে পাওয়া সব তথ্য মুছে ফেলা হয়।’

জেনেশুনে ফেসবুকের কোনো শর্ত ভঙ্গ করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। সব তথ্য ও তা থেকে উদ্ভূত পরিসংখ্যান মুছে ফেলা-সংক্রান্ত একটি লিখিত বিবৃতি ফেসবুককে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০